ট্রেনের কাছে হারছে বিমান

মাত্র এক দশক আগের কথা। ফ্রান্সিসকো গ্যালিয়েটিকে কাজের জন্য তার জন্মস্থান রোম থেকে মিলানে যেতেন। ৪০০ মাইল দূরের এ পথ পাড়ি দিতেন বিমানে চড়ে। এখন তিনি সে পথ অতিক্রম করেন ট্রেনে চড়েই। তিনি একা নন, ইতালির রাষ্ট্রীয় রেলওয়ে কোম্পানি ফেরোভি ডেলো স্ট্যাটোর ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান বলছে, রোম এবং মিলানের মধ্যে দেশটির এ প্রধান বাণিজ্যিক রুটে ট্রেনে যাতায়াতকারীর সংখ্যা এক দশকে বেড়েছে প্রায় চারগুণ। ২০০৮ সালে এই রুটে ট্রেনযাত্রীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। আর ২০১৮ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬ লাখ। আর তারই জেরে শুক্রবার থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ইতালির জাতীয় বিমান সংস্থা আলিতালিয়া। এভাবেই ইতালির ট্রেনবিপ্লবের কাছে হেরে যাচ্ছে বিমান। সিএনএন। এই দুই শহরের মধ্যে ভ্রমণকারী দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ এখন ট্রেনে ভ্রমণ করছেন। আর এ প্রবণতা শুরু হয় ২০০৮ সাল থেকে, যখন ইতালির উচ্চগতির ট্রেন যোগাযোগ আত্মপ্রকাশ করেছিল। এ ট্রেনে মিলান থেকে রোমে পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা। ইতালীয়রা অধিকাংশ সময় ছুটি কাটান ইতালিতেই। দেশটির দর্শনীয় স্থানসমূহে ঘুরে বেড়ান তারা। মিলানে উড়ে যাওয়া, তারপর নেপলস কিংবা রোমে যাওয়ার জন্য সাধারণ যাতায়াত মাধ্যম ছিল বিমানই। গ্যালিয়েটিকে মনে করেন, কম খরচে ফ্লাইট বিপ্লব শুরু হলে আলিতালিয়া উচ্চগতির ট্রেনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে হয়তো টিকে থাকতে পারত। কিন্তু তারা ব্যবসা করতে গিয়ে জগাখিচুড়ি অবস্থা তৈরি করে ফেলেছিল। ইতালির অভ্যন্তরীণ বাজারে তাদের স্বল্পদূরত্বের মধ্যে এয়ারলাইন্স এবং ট্রেনগুলোর মধ্যে বিপুল প্রতিযোগিতা ছিল। গ্যালিয়েটিকে বলেন, ‘আমি নিজেও মিলান, তুরিন বা ভেনিসে যেতে হলে অন্য অনেকের মতো ওই হাইস্পিড ট্রেনই ধরব-বিমান অবশ্যই নয়। এটি সুবিধাজনক, নিরাপদ এবং আরামদায়ক। জলবায়ু বিজ্ঞানী বারবান্ট সব সময়ই যাতায়াতের জন্য ট্রেনকে গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ট্রেনে ভ্রমণ করা আমার কর্তব্য। কারণ দূরপাল্লার যাত্রায় কার্বন নির্গমন কমানোর অন্যতম নির্ভরযোগ্য উপায় এটি।’