চট্টগ্রামে হামলা: ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ৮৩

চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হলের পূজা মণ্ডপে গত শুক্রবার হামলা, পুলিশের কাজে বাধা প্রদান ও হামলার ঘটনায় ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শনিবার কোতোয়ালী থানা পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত ৮৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদেরকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আজ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৮৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে। গ্রেফতার ৮৩ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে জেএমসেন হল পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনায় শনিবার চট্টগ্রামে আধাবেলা বলা হরতাল পালনের ঘোষণা করেছিলেন হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত। তবে শনিবার নগরীর কোথাও হরতাল পালন হয়নি। যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। যদিও হরতালের সমর্থনে এবং পূজা মণ্ডপে হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ পালন করে সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তসহ পূজা উদযাপন পরিষদের নেতরা। হরতালের সমর্থনে জেএমসেন হলসহ জামালখানে মিছিল হয়।

একই দাবিতে দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

সারাদেশে শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলার নিন্দা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া সারাদেশে একাধিক পূজা মণ্ডপে হামলা ও ভাংচুরের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন রানা দাশগুপ্ত।

তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবে এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে আজ আর উড়িয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে সাম্প্রদায়িক মহলের চক্রান্ত প্রতিরোধে আগামী শনিবার (২৩ অক্টোবর) সারাদেশে ভোর ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত গণঅনশন, গণঅবস্থান এবং সাম্প্রদায়িক হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে। ঢাকায় এ কর্মসূচি পালিত হবে শাহবাগ চত্বরে এবং চট্টগ্রামে আন্দরকিল্লা চত্বরে।

সংবাদ সম্মেলনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ১৩ অক্টোবর সকাল ১১টায় ভেঙে দেওয়া হয় কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির উত্তর পাড়ের দর্পণ সংঘের অস্থায়ী পূজামণ্ডপ। চানমনি কালিবাড়ির বিগ্রহ ও ফটকে অগ্নিসংযোগে ভস্মীভূত করা হয় এবং ১৭টি পূজা মণ্ডপের তোরণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ধর্ম অবমাননার মিথ্যা জিগির তুলে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা চালানো হয়েছে।