যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন বাংলাদেশি শাহ হালিম

যুক্তরাষ্ট্রের ‘প্রেসিডেনশিয়াল লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ বা রাষ্ট্রপতির আজীবন সম্মাননা পুরস্কার অর্জন করলেন বাংলাদেশি শাহ এম. হালিম। তিনি টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের প্রবাসী বাংলাদেশি সংগঠক বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব হিউস্টনের (বিএএইচ) সাবেক চেয়ারম্যান।

কমিউনিটির সেবায় অসামান্য অবদান, নেতৃত্বের শ্রেষ্ঠত্ব ও একটি শক্তিশালী জাতি গঠনে আজীবনের অঙ্গীকারের জন্যে এ স্বীকৃতি দিতে নির্বাচিত করে পুরস্কার কমিটি। পুরস্কার হিসেবে তিনি পেয়েছেন- যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষরিত সনদপত্র, ক্রেস্ট, প্রেসিডেন্টের সিলসহ স্মারক মুদ্রা, কোট পিন, শ্যাম্পেইন গ্লাস ও ব্যাজ এবং প্রেসিডেন্টের হোয়াইট হাউসের কলম।

অনুষ্ঠানে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, হিউস্টনের গণ্যমান্য ব্যক্তি ও কমিউনিটি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিএএইচ জানায়, শাহ এম. হালিম ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব হিউস্টনের মাধ্যমে কমিউনিটির কল্যাণ ও সামাজিক উন্নয়নে জোরালো ভূমিকা ও অবদান রেখেছেন। তিনি ৬ বছর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপার্সন ছিলেন এবং বাংলাদেশ-আমেরিকা সেন্টার স্থাপনে গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এছাড়াও তিনি স্থানীয় মূলধারার সংগঠনসহ নানা আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে অলাভজনক কাজে জড়িত আছেন।

এসব সংগঠনের মাধ্যমে সমাজ উন্নয়ন, মানবাধিকার, সামাজিক ন্যায্যতা ইত্যাদি বিষয়ে ভূমিকা রেখেছেন। পাশাপাশি তিনি বেশ কয়েক বছর হিউস্টন ফুড ব্যাংকে অবদান রেখেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হ্যারিকেন হার্ভির সময় ৫০ জনের বেশি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্ব দিয়ে ‘হার্ভি হিরো’ হিসেবে শত শত পরিবারকে সাহায্য করছেন শাহ এম. হালিম।

তিনি গত ১৫ বছর ধরে ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন ইন নর্থ আমেরিকার (ফোবানা) উদ্ভবের একজন নেতা ছিলেন। গত বছর করোনার সময় ফোবানা চেয়ারপার্সন হিসেবে তিনি উত্তর আমেরিকা ও বাংলাদেশের অসহায় মানুষদের জন্যে তহবিল সংগ্রহে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সংগঠনের নেতৃত্ব দেন।

শাহ এম. হালিম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি মনে করি, এ স্বীকৃতি শুধু আমার একার নয়, পুরো বাংলাদেশি কমিউনিটির। আমরা কতটা মানবিক ও সামাজিক এ অর্জন সেই বার্তা দিচ্ছে। অন্যদের সেবার জন্যে আমাদের চেষ্টা আমৃত্যু অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরো বলেন, এ স্বীকৃতির জন্য আমি সব স্বেচ্ছাসেবক বন্ধু ও সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষ করে, যারা আমার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। এমন সম্মাননার জন্যে নির্বাচিত করায় পুরস্কার কমিটিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিকে যারা সবসময় আমার পাশে আছেন। শাহ এম. হালিমের ‘প্রেসিডেনশিয়াল লাইফটাইম অ্যাওয়ার্ড’ অর্জনে বেশ আনন্দিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে কমিউনিটি সংগঠনগুলো।

বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের অধিবাসী শাহ এম. হালিম উচ্চশিক্ষা গ্রহণে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং পরে সেখানে স্থায়ী হন। তার বাবা প্রয়াত শাহ আব্দুল হালিম সমাজকর্মী এবং পোশাক রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। হালিমের পরিবার ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং তার পূর্বপুরুষদের অনেকেই সরকারি পর্যায়ে নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।