আফগানিস্তানে যুদ্ধ করা দুই যমজ ভাই রোনালদোর দেহরক্ষী

তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা সব সময় সুখকর অভিজ্ঞতা বয়ে আনে না। অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনারও মুখোমুখি হতে হয় তারকাদের। ভক্তদের ছেঁকে ধরার ঝামেলা এড়ানোর পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টি তো সব সময়ই প্রাধান্য পায়।

তাই দেখেশুনে দেহরক্ষী বেছে নিতে হয় তারকাদের। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যেমন দেহরক্ষী হিসেবে বেছে নিয়েছেন আফগানিস্তানে যুদ্ধ করা দুই যমজ ভাইকে।

রোনালদোর জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ইনস্টাগ্রামে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকার অনুসারীসংখ্যা সবচেয়ে বেশি। স্পেন, ইংল্যান্ড ও ইতালিয়ান ফুটবল মাতানো এই পর্তুগিজ তারকা এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন দুই যমজ ভাই। এলিট ফোর্সের সদস্য হিসেবে তাঁরা যুদ্ধ করেছেন আফগানিস্তানে।

গত আগস্টে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরেন রোনালদো। তারপর দুজনকে দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন তিনি। সেপ্টেম্বরে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ খেলতে রোনালদো সুইজারল্যান্ডের পথে উড়াল দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে এই দুই দেহরক্ষীকে দেখা গেছে।

এ মাসের শুরুতে কন্যাসন্তান আলানা মার্টিনার জন্মদিনে পার্টি দেন রোনালদোর প্রেমিকা জর্জিনা রদ্রিগেজ। রোনালদো অনুশীলনে যাওয়ার পথেও তাঁকে অনুসরণ করেন দুই দেহরক্ষী রোনালদো অনুশীলনে যাওয়ার পথেও তাঁকে অনুসরণ করেন দুই দেহরক্ষী।

তখন দেহরক্ষীদের মধ্যে একজনকে তাঁদের সঙ্গে দেখা গেছে। সংবাদমাধ্যম এত দিনে জানাল এই দুই দেহরক্ষীর পরিচয়। দুই দেহরক্ষীর একজনের নাম সের্জিও রামালেইরো ও আরেকজন জর্জ রামালেইরো। আফগানিস্তানে যুদ্ধে যাওয়ার আগে পর্তুগালের পুলিশ বিভাগের সদস্য ছিলেন এই দুই ভাই। পুলিশে থাকতে বিচারক ও রাজনীতিবিদদের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা।

পর্তুগিজ সেলিব্রিটি সাময়িকী ‘ফ্লাশ’ জানিয়েছে, সের্জিও ও জর্জের আরও একটি ভাই আছে। তিনজন একই সঙ্গে জন্মেছেন। তাঁদের মধ্যে রোনালদোর দেহরক্ষীর চাকরি পাওয়া দুই ভাইকে অবৈতনিক ছুটিতে যেতে বলেছিল পর্তুগিজ পুলিশ বিভাগ। তাঁদের অন্য কোনো লক্ষ্য থাকলে তাতে মনোযোগ দেওয়ার কথা বলা হয় পুলিশ বিভাগ থেকে। এরপরই রোনালদোর ডাক পান দুই ভাই।

সের্জিও ও জর্জের অন্য ভাইটির নাম আলেক্সান্দ্রে রামালেইরো। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তিনি এখনো পুলিশে কর্মরত। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘সের্জিও ও জর্জ অভিজাত পোশাক পরিধান করে। যদিও তাঁদের দেখে সাধারণই মনে হয়। ভিড়ের মধ্যে মিশে যেতে পারে। সঠিক সময়ে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’ এর আগে সুইস দল ইয়ং বয়েজের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচ খেলতে যাওয়ার সময় ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে রোনালদোর সঙ্গে দেখা গেছে এই দুই দেহরক্ষীকে।

রোনালদো সাম্প্রতিক সময়ে নিজের নিরাপত্তা জোরদার করেছেন। অপরাধী চক্রের ‘লক্ষ্যবস্তু’তে পরিণত হয়েছেন—এমন খবর আগেই পৌঁছেছে রোনালদোর কানে। সে জন্যই নিরাপত্তা জোরদার করা।

এর আগে রোনালদোর দেহরক্ষী ছিলেন সাবেক এক মিক্সড-মার্শাল আর্ট খেলোয়াড় এবং আরেকজন এলিট ফোর্সে কাজ করা সাবেক প্যারাট্রুপার। নুনো মারেকোস নামের সাবেক এ প্যারাট্রুপারকে রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদে থাকতে তাঁর সঙ্গে দেখা গেছে।

২০১৮ সালে কিয়েভে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে রোনালদোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে দেখা গেছে সাবেক এমএমএ খেলোয়াড় গনকালো সালগাদোকে।

রোনালদোর বর্তমান দুই যমজ দেহরক্ষী স্কুল পেরিয়ে সামরিক বাহিনীতেও যোগ দিয়েছিলেন। ‘কমান্ডোজ’ নামের এলিট ফোর্সের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন দুজন। তিন ভাই যে কর্নেলের অধীন ছিলেন, তিনি এখন সাবেক। সাবেক সেই কর্নেল এর আগে পর্তুগিজ এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘মানসিক ও শারীরিকভাবে তাঁরা খুব শক্তিশালী।’