পদত্যাগের পর সাক্কুকে বিএনপি থেকে আজীবন বহিষ্কার

কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কুকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়, এখন থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ না রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।

জানা গেছে, মনিরুল হক সাক্কু দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এবারও কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এর আগে এদিন বিকেলে পদত্যাগ করেন মনিরুল হক সাক্কু। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, আজ আমার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে পদত্যাগ করেছি। পদত্যাগপত্রটি দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি রাবেয়া চৌধুরীর হাতে পোঁছানো হয়েছে। যার অনুলিপি কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়।

তিনি আরও বলেন, আমি কুমিল্লা পৌরসভার সর্বশেষ চেয়ারম্যান ও সর্বশেষ মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১১ সালে কুমিল্লা পৌরসভা কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে রূপান্তরিত হয়। ২০১২ সালের প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমি সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হই এবং ২০১৭ সালে বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হই।

আপনারা জানেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচন আগামী ১৫ জুন। আমার দল বিএনপি একটি যৌক্তিক দাবির প্রেক্ষাপটে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আমার দলের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। কিন্তু আমার তৃণমূলের নেতাকর্মী, সমর্থক ও নগরবাসীর অনুরোধে আমাকে বাধ্য হয়ে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে। আমি আমার দলীয় পদবি ধারণ করে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে আমার প্রিয় দল (বিএনপি) বিতর্কিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তাই দলীয় ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখার স্বার্থে আমি কুমিল্লা (দ.) জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভায় উপস্থিত না থাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য পদ থেকে মনিরুল হক সাক্কুকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০১২ সালে কুসিক নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। সেই সময় সাক্কু দল থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক কমিটির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে মেয়র পদে জয়ী হন। পরবর্তীতে তার পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে পুনরায় তাকে বিএনপিতে নেওয়া হয়। ২০১৭ সালের দ্বিতীয়বারের কুসিক নির্বাচনে মনিরুল হক সাক্কু বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে মেয়র পদে জয়ী হন।