সুনামগঞ্জে ব্যবসায়ীর বাড়িতে সশস্ত্র হামলা, আটক ২

সুনামগঞ্জের দোয়ারবাজার উপজেলার দক্ষিণ কলাউড়া গ্রামের গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ওরফে নতুন আনোয়ারের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হামলায় আনোয়ার হোসেন (২৫) ও তার স্ত্রী রুনা বেগম (২৩) ও তার মা রোকেয়া বেগম (৫৫) গুরুতর আহত হয়েছেন।

রোববার (২২ মে) দুপুরে দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবদুলাল ধর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ২০ মে শুক্রবার সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তবে আহতরা সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এই হামলার ঘটনায় চারজনকে আসামী করে থানায় মামলায় দায়ের করা হয়েছে। মামলার আসামি একই গ্রামের মো. কাশেম ভূঁইয়া ও মো. কাউছার ভূঁইয়া নামের দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে মামলার অন্য দুই আসামি মো. কাইয়ুম ভূঁইয়া ও দুলাল ভূঁইয়া পলাতক রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলাউড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের বাড়ির সীমানা দেয়ালের পাশে কাশেম ভূঁইয়ার ফসলি জমি রয়েছে। প্রায় সময় আনোয়ারের বাড়ির বাউন্ডারির দেয়াল ঘেঁষে গর্ত করে মাটি কাটেন কাশেম ভূঁইয়া। এতে করে বাড়ির বাউন্ডারির দেয়াল ভেঙে যায় এবং কিছু অংশ হেলে যায়। বাউন্ডারির পাশ ঘেঁষে মাটি কাটতে বাধা দেওয়া নিয়ে আনোয়ার হোসেন ও কাশেম ভূঁইয়ার মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। এর জের ধরে গত শুক্রবার সকালে কলাউড়া মার্কেটের মো. কাশেম ভূঁইয়া তার ছেলে কাউছার ভূঁইয়া, কাইয়ু ভূঁইয়া ও আত্মীয় স্বজনসহ ৮ থেকে ১০ জন আনোয়ারের বাড়ির গেট ভেঙে প্রবেশ করে দা, লোহার রড, লাটি দিয়ে পরিবারের সবার ওপর অতর্কিত হমলা চালায়। এ সময় হামলায় আনোয়ার হোসেনের মায়ের হাত ভেঙে যায়, আনোয়ার ও তার স্ত্রী গুরুতর আহত হয়।

আনোয়ার হোসেন বলেন, কাশেম ভূঁইয়া আমার বাড়ির বাউন্ডারির দেয়ালের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে দেয়ালের নীচ দিয়ে অন্যায়ভাবে মাটি কাটলে আমি জিজ্ঞাসা করায় আমাদের ওপর হামালা চালায়। আমার মা ও স্ত্রী বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। আমি মধ্য কলাউড়া থেকে এখানে এসে জায়গা কিনে বাড়ি করেছি। এখানে আমার কোন আত্মীয়-স্বজন নাই বলে আমাকে একা পেয়ে আমার ওপর প্রায়ই অত্যাচার করে তারা। আমাকে মেরে লাশ-গুম করার হুমকিও দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানায়, কাশেম ভূঁইয়া ও তার ছেলেরা সরকার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে থাকে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুষের বাড়িতে হামলা চালানো তাদের পেশা। কলাউড়া মার্কেটে আসা ক্রেতাদের সঙ্গেও কাশেম ভূঁইয়ার পরিবারের লোকজনের প্রায় ঝগড়া হয়। নিজের আত্মীয়দের ওপর প্রায় সময় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় কাশেম ভূঁইয়া ও তার ছেলেরা।

অভিযুক্ত কাশেম ভূঁইয়ার কারাগারে আটক থাকায় ও অন্য অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবদুলাল ধর বলেন, কলাউরা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বাড়িতে হামলার ঘটনায় আনোয়ার হোসেন থানায় অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনার প্রমাণ পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে মামলা নিয়েছি এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটক করেছি। বাকী আসামিদের ধরতে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।