ছাতকে ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি, যোগাযোগ বন্ধ

সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় ৪র্থ দফায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপধারণ করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলার ১৩টি ইউপি ও ১টি পৌরসভায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

বুধবার পর্যন্ত ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নতুন-নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ। বুধবার দুপুর থেকে ছাতক উপজেলার সঙ্গে সারা দেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ গেছে। ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে শতাধিক মানুষ অবস্থান নিয়েছেন বলে ইউএনও জানিয়েছেন।

বুধবার দুপুর পর্যন্ত ছাতকে সুরমা, পিয়াইন, চেলা নদীসহ সব নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি এখানে ব্যাপক আকার ধারণ করছেন। ইতোমধ্যে বন্যায় তলিয়ে গেছে ৩ শতাধিক গ্রাম, উপজেলার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ৩ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বীজতলা ও শত শত একর জমির বোরো ফসল। অনেক হাটবাজার, পাড়া-মহল্লা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পৌর শহরের নৌকা চলছে, থানা, উপজেলা পরিষদ এলাকার পানি ঢুকে পড়েছে। উজানে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে এখানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীতে ব্যাপক হারে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ ও ছাতক ৩ কিলোমিটার সড়ক এলাকায় তিন ফুট ও চার ফুট পর্যন্ত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সড়ক। উপজেলার সদরের সঙ্গে ইসলামপুর, চরমহল্লা, ভাতগাঁও, সিংচাপইড়, উত্তরখুরমা, গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও, ছৈলা আফজলাবাদ, কালারুকা, নোয়ারাই, জাউয়াবাজার, দোলারবাজারসহ ১৩টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শতাধিক স্টোন ক্রাসার মিল, পোল্ট্রি ফার্ম ও মৎস্য খামারে বন্যার পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। শাক-সবজির বাগানেও পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।

বেরাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানিক মিয়া জানান, তার বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে মূল্যবান কাগজপত্র, বইসহ পানিতে ডুবে গেছে। নৌকা দিয়ে বিদ্যালয়ের কাগজপত্র ওপরে তোলা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বুধবার দুপুর পর্যন্ত সুরমা-মেঘনা স্টেশনে সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রহমান জানান, বন্যার্তদের জন্য শহরের ৪টি বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইতোমধ্যেই এসব আশ্রয় কেন্দ্রে পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে।