দিশেহারা বানভাসি মানুষ, উদ্ধারে সেনাবাহিনী

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট নগরীসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বাসাবাড়ির রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বানভাসি মানুষ।

এদিকে সিলেটের বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে নামছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা থেকে রেসকিউ বোট আসছে। বোটগুলো আসলে দুই জেলার সব উপজেলায় উদ্ধার অভিযানে নামবে সেনাবাহিনী।

নদীর পানি উপচে সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, বিয়ানীবাজার ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। হু হু করে পানি বাড়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। পানিতে নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বন্যার পানি বিপৎসীমার ১০৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিপৎসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল পানি।

তিনি জানান, ভারতের আসাম, মেঘালয়ে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা হয়েছে। আগামী দুই-তিন দিন বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার পানি ঢুকে পড়ে সিলেটের কুমারগাঁওয়ের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে। এই উপকেন্দ্র দিয়ে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

উপকেন্দ্রে পানি ঢুকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় গোটা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা এবং কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার অনেক এলাকায়। এর বাইরে সিলেট নগরের উপশহরসহ কয়েকটি এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

গত মাসের বন্যায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, উপশহরসহ কয়েকটি এলাকার বিদ্যুতের সাবস্টেশন পানিতে তলিতে যায়। এতে বন্ধ হয়ে যায় ওইসব এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ। এবারও একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বন্যার কারণে জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা আগে থেকেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এসব এলাকায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়স্থলে যাওয়ার জন্য এসব এলাকার লাখো মানুষ আকুতি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।