ওয়াসার তাকসিমের ১৩ বছরের ‘আমলনামা’ চেয়েছেন হাইকোর্ট

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের মোট বেতন, উৎসাহ ভাতা, আনুষঙ্গিক সুবিধা হিসেবে যত টাকা নিয়েছেন তার হিসাব তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে এ হিসাব আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে ওয়াসা বোর্ডকে।

বুধবার (১৭ আগস্ট) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি রিটের শুনানিতে এ আদেশ দেন।

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ক্যাব) এর করা এ রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, গত ১৩ বছরে কত টাকা বেতন, বোনাস এবং অন্যান্য সুবিধাদি দেওয়া হয়েছে তার হিসাব আগামী ৬০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে জমা করতে বলেছেন আদালত। ঢাকা ওয়াসার এমডিকে অপসারণে নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাকে অপসারণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে এ রুল জারি করেন আদালত।

তাকসিম এ খান ২০০৯ সাল থেকে ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে রয়েছেন। তার সময়ে বেশ কয়েকটি বিষয়ে তিনি আলোচিত হয়েছেন।

ওয়াসার সরবরাহ করা পানি সুপেয় এবং তিনিও সেটি না ফুটিয়েই পান করেন। তার এমন বক্তব্য ব্যপক আলোচনায় আসে। তখন সমাজকর্মীরা তাকে জুরাইন এলাকায় সরবরাহ করা ওয়াসার পানির শরবত খাওয়াতে ওয়াসা ভবনে ভিড় করেন। কিন্তু তিনি সেদিন তাদের সাক্ষৎ দেননি।

পানির দাম বৃদ্ধি করার প্রস্তাব নিয়ে ফের আলোচনায় আসেন তিনি। এ নিয়ে তিনি বলেন, ওয়াসা এখনও ভিক্ষা করে বা সরকারের ভর্তুকিতে চলে। তাই পানির দাম বৃদ্ধি করে সে ভর্তুকি কমাতে চান। একই সঙ্গে আবার তিনি নিজের বেতন বাড়ানোর কথা বলেন বোর্ডকে।

ওয়াসার কোনো আয় না থাকলেও নিজের এবং কর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাবেও সমালোচিত হন দীর্ঘ সময় ধরে এমডি পদে থাকা তাকসিম এ খান।

তাকসিমসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে ১৩২ কোটি ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন ওয়াসার সাবেক কর্মচারী শাহাব উদ্দিন সরকার। অবশ্য আদালত সেই মামলার আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছেন। অভিযুক্তরা সরকারি কর্মচারী হওয়ায় এ অভিযোগে মামলা ও তদন্ত করা দুদকের এখতিয়ার বলে উল্লেখ করেছেন আদালত।

অভিযুক্তরা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের তহবিল থেকে ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে সমিতির বর্তমান সম্পাদক শাহাব উদ্দিন এ অভিযোগ আনেন।

এ বিষয়ে ওয়াসার এমডি বলেছেন, চাকরিচ্যুত করায় শাহাব উদ্দিন ক্ষুব্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

তাকসিম এ খান ষষ্ঠ দফায় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। এ দফায় তিন বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হয় তার।