ডেনজেল ‘দ্য অ্যাঞ্জেল’

বাবা ছিলেন আমেরিকান অভিনেতা ডেনজেল ওয়াশিংটনের পাড়ভক্ত। তাই জন্মের পর ছেলের নাম রেখে দিলেন ‘ডেনজেল ডামফ্রিস’। হয়তো জানতেন না, ছেলে ফুটবলের ডিএনএ নিয়ে জন্মেছে। নেদারল্যান্ডসের জার্সিতে কমলা ঝড় তোলার স্বপ্ন নিয়ে ফুটবলের শহর রটারডামে বেড়ে ওঠতে লাগলেন ডামফ্রিস। ফুটবল হয়ে গেল তার দিনরাত। কিন্তু স্কিলের ঘাটতির কারণে বন্ধুরা ঠাট্টা করতো ডামফ্রিসকে নিয়ে। ডামফ্রিস হাল ছাড়েননি। চার বছর আগে নেদারল্যান্ডের জার্সি গায়ে জড়িয়েই নিন্দুকদের প্রথম জবাব দিয়েছিলেন এ ডিফেন্ডার। দুর্দান্ত খেলেছেন ২০২০ ইউরোতে। এবার বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে শেষ ষোলোতে নেদারল্যান্ডসের জয়ে ডামফ্রিসের অবদান এক গোলের সঙ্গে দুই অ্যাসিস্ট। বলার অপেক্ষা রাখে না, ইন্টার মিলানের ২৬ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার জীবনের সেরা রাত কাটিয়েছেন গতকাল।

বাছাইপর্বে উতরাতে না পারায় ২০১৮ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস খেলতে পারেনি। সে বছরের অক্টোবরে জাতীয় দলে ডাক পান ডামফ্রিস। ১৩ই অক্টোবর জার্মানির বিপক্ষে অভিষেক হয় তার। প্রথম গোল পান ইউক্রেনের বিপক্ষে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে। অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে পরের ম্যাচেও গোল। গ্রুপপর্বে ডামফ্রিস জায়গা করে নেন সেরা একাদশে। যদিও শেষ ষোলোতে চেক প্রজাতন্ত্রের কাছে হেরে যায় নেদারল্যান্ডস। বিশ্বকাপে অবশ্য তেমনটা হতে দেননি ডামফ্রিস। লুইস ভ্যান গালের ৪-৩-৩ ফরমেশনে শুরুতে রাইট ব্যাকে খেলেন। পরে ৩-৪-৩ ফরমেশনে চলে যান রাইট উইংগারের ভুমিকায়। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে মেম্ফিস ডিপাই ও ড্যালি ব্লিন্ডকে দিয়ে গোল করালেন। তারপর ব্লিন্ডের অ্যাসিস্টে নিজে করলেন দলের তৃতীয় গোলটি। সবমিলিয়ে জাতীয় দলে ৪১ ম্যাচে ৬ গোল। অথচ গ্রুপপর্বে তেমন আলোচনাতেই ছিলেন না তিনি।

ম্যাচে ১৭টি শট নেয় যুক্তরাষ্ট্র। অনটার্গেটে ছিল ৮টি। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডস ১১ শটের ৬টি লক্ষ্যে রেখে গোল তুলে নেয় তিনটি। সহজ সুযোগ নষ্ট হওয়ার খেসারত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে নিজেদের রক্ষণের কথাও যেন ভুলে গিয়েছিল তারা। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগান ডামফ্রিস। ১৯৭৮ সালে রব রেনসেনব্রিঙ্কের পর নেদারল্যান্ডের প্রথম খেলোয়াড় ডামফ্রিস, যিনি বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচে তিন গোলে অবদান রাখলেন। বেনসেনব্রিঙ্ক অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে এক গোল ও তিন অ্যাসিস্ট করেন। ডামফ্রিস-রেনসেনব্রিঙ্ক ছাড়া এমন কীর্তি আছে শুধু কিংবদন্তি ইয়োহান ক্রুইফের (১৯৭৪ বিশ্বকাপ)। ক্রুইফ-রেনসেনব্রিঙ্করা ফাইনালে নিয়ে গিয়েছিলেন নেদারল্যান্ডসকে। ডামফ্রিস কি পারবেন তাদের স্মৃতি ফেরাতে?করলেন নিজেকে।