শীতে কাঁপছে মৌলভীবাজার, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫.৬ ডিগ্রি

সারা দেশে বেশ কয়েক দিন ধরে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মৌলভীবাজার। এখানে মৌসুমে শীতের পরিমাণ একটু বেশি থাকে। মৌলভীবাজারে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। দুপুরে উত্তাপহীন সূর্যের দেখা মিললেও বিকালের আগেই তা ঢাকা পড়ছে কুয়াশার চাদরে, সঙ্গে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়া, এমন বিরূপ আবহাওয়ায় নাকাল জনজীবন।

এই শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

শুক্রবার জেলার শ্রীমঙ্গলে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। গতকাল ছিল ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মৌলভীবাজারের আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. মুজিবুর  রহমান।

তিনি বলেন, তাপমাত্রা নিচে নামার কারণে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা।

এদিকে শীতবস্ত্রের চাহিদা বাড়ায় ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। নিম্নবিত্ত, অসচ্ছল ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছে বিপাকে। হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে কাঁপছেন তারা। শীতের কারণে সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষ। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন চা শ্রমিক, বোরো চাষি, ছিন্নমূল ও দিনমজুররা।

মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি, হাকালুকি, হাইল হাওরবেষ্টিত এলাকার অধিকাংশ মানুষই খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষের বসবাস। শীত এলেই তাদের কষ্ট বাড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে সময়মতো কাজে যেতে পারছে না তারা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ে হাসপাতালে। সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্করা। অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ রোগীকে প্রতিদিন আউটডোর ও ইনডোরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিশ্বজিৎ দেব বলেন, শীতের প্রভাবে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপ বাড়ছে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে জেলার ৬৭ ইউনিয়ন ও পাঁচ পৌরসভায় ৩৫ হাজার ২৮০টি কম্বল পাঠানো হয়েছে। প্রতি উপজাত দুই লাখ করে টাকা পাঠানো হয়েছে, শীতবস্ত্র কিনে দরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণ করার জন্য। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আরও কম্বলের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পেলে বিতরণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, তীব্র শীতে শীতার্ত মানুষের মাঝে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে হাওর চা বাগানসহ সর্বত্র জেলা প্রশাসনের কম্বল বিতরণ অব্যাহত থাকবে।