পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল

অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে করা মামলায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক সালাহউদ্দিন সাক্ষ্য দেন।

দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মদ আলী সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলাটিতে মোট ১০৬ জনের মধ্যে ৯৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

এদিন কারাগারে আটক চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের উপস্থিতিতে তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এদিন তা শেষ না হওয়ায় আদালত আগামী ১ মার্চ তার সাক্ষ্য এবং জেরার জন্য দিন ধার্য করেছেন।

গত ৮ সেপ্টেম্বর এ মালায় একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

পিকে হাওলাদার ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন–পি কে হালদারের মা লিলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রিতিশ কুমার হালদার, রাজিব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায়, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা। এরমধ্যে অবন্তিকা বড়াল, শংখ বেপারী, সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা কারাগারে আটক রয়েছেন।

২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এরপর তদন্ত করে পি কে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে সংস্থাটি।

মামলা সূত্রে জানা যায়, দেশের চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পি কে হালদার বিভিন্ন কোম্পানির নামে-বেনামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বের করে নেন। প্রতিষ্ঠান চারটি হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।

এর আগে এই চার প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনে নিজের নিয়ন্ত্রণ নেন পি কে হালদার। ২০২০ সালের শুরুর দিকে এই আর্থিক কেলেঙ্কারি জানাজানি হয়। তার আগেই ২০১৯ সালে দেশ ছাড়েন তিনি।

উল্লেখ্য, সাড়ে তিন হাজার কোটির বেশি টাকা আত্মসাৎ করে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান পি কে হালদার। গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা থেকে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করে ভারতের আর্থিক দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তারা পি কে হালদারের পাঁচ সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের আগে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পি কে হালদারের প্রাসাদসম বাড়িসহ অনেক সম্পদের সন্ধান পায়।

গত ৭ জুন ইডি আদালতকে জানায়, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় পি কে হালদারসহ তার সহযোগীদের ৮৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে তারা। পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের ৩০০ কোটি টাকার সম্পদ পাওয়ার কথাও আদালতকে জানিয়েছেন ইডি।