মিয়ানমারে নির্বাচন পেছাতে নতুন ছলচাতুরী

চলতি মাসের প্রথমদিনেই অভ্যুত্থানের দুই বছর পালন করেছে মিয়ানমার। গণতন্ত্রকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর ক্ষমতাকে ধরে রাখতে উঠেপড়ে লেগেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। নির্বাচন পেছাতেই যেন জান্তাদের যত ছলচাতুরী! 

আগস্টে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও বুধবার অস্থিতিশীলতার অজুহাতে ফের জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানো হয় আরও ৬ মাস। সংবিধান অনুযায়ী জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর অর্থ হলো নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়া। রাষ্ট্রনীতির মারপ্যাঁচে সেই সুযোগটাই লুফে নিচ্ছে জান্তা সরকার। এএফপি। 

২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে অস্থির অবস্থা বিরাজ করছে। গ্রাম-শহরের আনাচে-কানাচে বাড়ছে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা। বুধবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যায়, জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং স্বীকার করেছেন, ‘দেশের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি জনপদই সম্পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণে নেই।’ তবুও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনেই জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ান ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিল। ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে বলেন, জরুরি অবস্থা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হবে।’ এদিনই জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর তীব্র নিন্দা করছে যুক্তরাষ্ট্র। ‘অবৈধ শাসন’ উল্লেখ করে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বার্মার (মিয়ানমারের পূর্ব নাম ধরে) সামরিক শাসনের জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানো সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে। সামরিক বাহিনীর অবৈধ শাসনকে দীর্ঘায়িত করে দেশটির দুর্ভোগ আরও বাড়াচ্ছে।’ 

সেনাবাহিনীর দেশ দখলের দুই বছর পূর্তিতে মৌন প্রতিবাদ করেছে মিয়ানমারের জনগণ। ঘরবন্দি ছিল মানুষ, রাস্তাঘাটে ছিল সুনসান নীরবতা, বন্ধ ছিল দোকানপাট। তাতে কর্ণপাত না করে জান্তা সরকার হাঁটছেন আপন রাস্তায়। বাড়ালেন জরুরি অবস্থার মেয়াদ যা এ মাসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। দেশের সংবিধান অনুযায়ী জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোর মানে হলো নির্বাচনের তারিখকে পিছিয়ে দেওয়া। ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতার পর কয়েক দশক ধরেই মিয়ানমার শাসন করছে সেনারা। অভ্যুত্থান বলে কথা নয়, এর আগেও দাপটের সঙ্গে দেশটির অর্থনীতি ও রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। আগামীতেও এর ব্যতিক্রম কিছু ঘটবে না।