সিলেট জাপায় তোলপাড় শুরু: সিসিক নির্বাচন

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে তোলপাড় চলছে। ইতিমধ্যে একজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে। সামনে অবস্থা আরও টালমাটালের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে, পার্টির নীতিনির্ধাকরা কোটি টাকার বিনিময়ে মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুলকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছেন- এমন অভিযোগ উঠছে জাতীয় পার্টির ভেতর থেকে। সম্প্রতি সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে এমন অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য মাহবুবুর রহমান চৌধুরী।

তার সঙ্গে সেদিনের সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির আরও অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন এবং এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন।

এরপর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হলে যে জবাব তিনি দিয়েছিলেন তা সন্তোষজনক না হওয়ায় ২১মে রোববার তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

বিষয়টি পার্টির সবমহলে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেট মহানগর জাপার একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আসলেইতো টাকার বিনিময়ে জাপা নজরুল ইসলাম বাবুলকে মনোনয়ন দিয়েছে। নইলে গত নির্বাচনেও যিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে গো হারা হেরেছিলেন, যিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্বে ছিলেন দীর্ঘদিন, তেমন একজন হাইব্রিডকে দলে আসতেই এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে কেন?

আরেক নেতা বলেন, আসলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জনগন থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। মাঠের খবর তারা জানেন না বা রাখেন না। তার প্রয়োজনও মনে করেন না।

নেতৃবৃন্দের মতে, নজরুল ইসলাম বাবুলের কোন অবস্থানই নেই দলে। তাই দলের নেতাকর্মীরা তাকে ভোট দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা। 

শেষ পর্যন্ত নিজের কোম্পানীর শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ভোট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে তাকে।

জানা গেছে, পার্টিতে মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন হিসাবে যারা পরিচিত তারা পৃথক একটা বলয় তৈরি করছেন। সেই বলয়ের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী ময়দানে নজরুল ইসলাম বাবুলের বিরুদ্ধে মাঠে সোচ্চার থাকবেন, কাজ করবেন। পার্টি ও প্রার্থীর ক্ষতি হবে। তখন আবার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এতে পার্টির অনেক ত্যাগী ও পুরানো নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে জেনেও তারা কেন্দ্রকে কঠিন বার্তা দিতে কাজ শুরু করেছেন।

তাদেরই একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কাউন্সিলর নির্বাচনে যে ব্যক্তি হেরেছে, অন্যদল থেকে আসা তেমন মানুষকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয়াটাইতো হাস্যকর। আর জাতীয় পার্টি এমন হাস্যকর কাজে বরাবরই অভ্যস্ত। ভাগ্যে যাই থাকুক, আমরা এবার পার্টির হাস্যকর কর্মকা-ের বিরুদ্ধে ভোটের মাঠেই প্রতিবাদ জানাব।