একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম

মনটা চায় আবার ইস্তফা দিয়ে ফিরে আসি। যেখানে মুগুর দেয়ার সেটাও জানি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম। মশিউজ্জামান (বারের গত নির্বাচনের সাব কমিটির প্রধান)কে আমরা মনে করতাম, ওরে বাবা, কী জানি ফেরেস্তা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান। যে সকল সুশীলরা আমাদেরকে বুদ্ধি দিতে যাবেন সেই সকল সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেবো। গত রোববার বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তপস। 


ব্যারিস্টার তাপস তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ গঠনের আগেও অনেক বড় বড় আইনজীবী নেতা ছিলেন। কিন্তু যখন এই সংগঠন গঠন করা হয় তখন কিন্তু এইসব বিজ্ঞ, খ্যাতনামা, প্রাজ্ঞ, বড় বড় নেতাদের বাদ দিয়ে আমাদের মতো ছোট আইনজীবীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ গঠন করা হয়। সুতরাং এগুলো ভুললেসবাই খালি ইতিহাস ভুলে যায়। ইতিহাস ভুললে চলবে না। ইতিহাসের নির্মম পরিহাস হলো ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না। কিন্তু ইতিহাস থেকে যারাই শিক্ষা গ্রহণ করে তারাই সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, নেয়, নিয়ে চলে। ওরা ৯ বছর চুরি করে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। আমাদের মাঝে বিভেদ, অনৈক্য, বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে চুরির মাধ্যমে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে ক্ষমতা দখল করেছিল। তারা দাম্ভিকতা করতো। আমরা এতটা নিচু চিন্তা করতে পারিনি। ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করে আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নেয় তারা। এই নির্বাচনের আগের নির্বাচনে আমাদের সেই ভুল ভেঙেছে। আমরা হাতেনাতে ধরেছি তাদের চুরি। হাতেনাতে চুরি ধরাতেই তারা এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তাপস বলেন, মশিউজ্জামানকে আমরা মনে করতাম, ওরে বাবা, কি জানি ফেরেস্তা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান। একটা ভণ্ড। একটা রাজাকারের দালাল। এই মশিউজ্জামানকে আমরা মনে করতাম কী বিশাল এক ফেরেস্তাতুল্য। উনি যা বলবেন তাই হবে। আমাদের ন্যায্য দাবি ছিল। আইনগত দাবি ছিল। আমাদের সম্পাদক প্রার্থী আব্দুন নুর দুলাল তিনি হাতেনাতে তাদের চুরি ধরেছেন। ৬শ’ ব্যালট পেপার গায়েব। ৩১শ’ ভোট পড়েছে। তারা বলে ২৬শ’ ভোট পড়েছে। ৫শ’ ভোট গায়েব। আমরা যখন এগুলো তুলে ধরেছি, কঠোর হয়েছি, সোচ্চার হয়েছি, তখন তাদের থলের বিড়াল বেরিয়ে গেছে। আমরা বলেছি সবার সামনে ব্যালট পেপার এনে গণনা করো। যা ফলাফল হবে আমরা তা মেনে নেবো। সে সময় আমাদের সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নুর দুলাল সে অধিকার পাননি। তারা ভোট গণনা বন্ধ করে দিয়ে ৪১ দিনের একটি নাটক সাজালো। প্রতিপক্ষ সম্পাদক প্রার্থীর চোখের ইশারায় ভোট গণনা না করে মশিউজ্জামান চলে গেলেন। তাপস বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের কার্যক্রম সম্পন্ন না করে কোনো ভাবেই যেতে পারে না। কিন্তু তিনি তাই করেছেন। যোগসাজশে তারা এই কার্যক্রম করেছেন। এখন তারা বড় বড় কথা বলেন। এবারের নির্বাচনে তারা যে ন্যক্কারজনক কাজ করেছেন, একজন সভাপতি প্রার্থী যেভাবে ব্যালট ছিনতাইয়ে লিপ্ত হয়েছে তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে কোনো সভাপতি প্রার্থীকে তাও আবার মাথায় টুপি দিয়ে, কতোরকম ভণ্ডামি। মাথায় টুপি দিয়ে ব্যালট ছিনতাই করে। ভণ্ড। ব্যালট চোর। ওরা যে দল করে সেই দল গণতন্ত্র চোর, সংবিধান চোর। ভোট চোর। ৯ বছর চোরেরা লুণ্ঠন করেছে। আমরা আর তা হতে দেবো না। এই চোরদের সতিনি বলেন, আমাদের মাঝেই আবার কেউ কেউ সুশীল হয়ে যায়। নির্দেশনা দিয়ে রাজনীতি হয় না। ক্যামেরা আছে, অনেক কিছু বলা যাবে না। তা নাহলে একটা গল্প শোনাতাম। যাইহোক এই সুশীল আমাদের দরকার নেই। আমাদের সংগঠনের সুযোগ সুবিধা নিয়ে কেউ যদি সুশীল হতে চায় তাহলে তাকে সুশীল পর্যায়ে আমরা পৌঁছে দেবো। আমার দরকার ত্যাগী, পরীক্ষিত, আদর্শবান নেতাকর্মী। আমার সুশীল দরকার নেই। আমাকে শিক্ষা দেয়ার দরকার নেই। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে শিক্ষা দেয়ার দরকার নেই। আমরা যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহণ করে এসেছি। সেই পাকিস্তান আমল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছি বাঙালি জর্টে হবে না।  আমাদের শিক্ষা দেয়ার দরকার নেই। কে শিক্ষা দিবে আমাদেরকে? সুতরাং কেউ যদি সুশীল হয় আমরা মনে করবো আপনারা ওই পক্ষ। আপানারা আমাদের পক্ষের না। 

তাপস বলেন, আমি নগর ভবন থেকে শুনি যে আমার নেতাকর্মীদের গায়ে হাত দেয়া হয়। মনটা চায় ইস্তফা দিয়ে আবার ফিরে আসি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম।