মৌলভীবাজার শহর থেকে পানি কমছে, বাড়ছে রাজনগরে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার পৌর শহর থেকে পানি কমা শুরু করলেও বাড়ছে দুর্ভোগ। দুর্গত এলাকায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বন্যাকবলিত মানুষ এখনও বাসাবাড়িতে ফিরতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনও বন্যাকবলিত কোনো কোনো এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী দেয়া হয়নি। মঙ্গলবার ব্যক্তিগত সফরে এসে মৌলভীবাজারে বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ করছে সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। এ সময় তিনি বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে অনেক ঘরবাড়ি হারিয়েছে। আমি বিষয়টি জেনে স্থানীয় এমপি ও প্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করেছি। মন্ত্রণালয় থেকে তাদের পুনর্বাসন করা হবে। জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মনু নদের পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, উজান থেকে পানি না আসলে ৩-৪ দিনের মধ্যে মনু নদের স্বাভাবিক হয়ে যাবে। পৌর শহরের বড়হাটের বারইকোনা ভাঙন দিয়ে মনু নদের পানি এখনও শহরে প্রবেশ করছে। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বন্যাদুর্গতদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ১৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা, এক হাজার ১৪৩ টন চাল ও পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে এবং ৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দ হয়েছে এক হাজার বান্ডিল টিন ও ৩০ লাখ টাকা। সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নে গিয়ে অনেক বন্যার্ত মানুষের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, এখনও আমরা ত্রাণ পাইনি। ত্রাণের জন্য সকাল থেকে এখানে অপেক্ষা করছি। আবার কেউ কেউ কিছু ফেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে তিন দিন বন্ধ থাকার পর মৌলভীবাজার-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে মঙ্গলবার থেকে যান চলাচল শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনও সিলেটের সঙ্গে মৌলভীবাজারের যান চলাচল বন্ধ। এদিকে মঙ্গলবার সকালে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের হলদিগুল এলাকায় কুশিয়ারা নদীর বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে পার্শ্ববর্তী এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, ওই ভাঙন বন্ধন না করলে বন্যায় আশপাশের ৪০-৫০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, রাজনগর উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সদস্যরা অবস্থান করছেন এবং ওই ভাঙন বন্ধ করার জন্য তাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।