মোদি-হাসিনা-মমতা ইডেনে বসলে তিস্তার সমাধান হতে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচের পরিমণ্ডলে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির মতো অনেক দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধান হতে পারে। ২২ নভেম্বর ইডেনে দুই দেশের দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচে একটা ইতিহাসের সৃষ্টি হবে। শুক্রবার কলকাতায় তিনি এসব কথা বলেন। ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসঙ্গে ঐতিহাসিক খেলা দেখবেন। তখন অনেক দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়েও তারা কথা বলবেন বলে আমার বিশ্বাস। মমতা কি তিস্তার ব্যাপারে তার অনড় মনোভাব থেকে সরে আসবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন জানান, শেখ হাসিনার সঙ্গেও মমতার খুবই ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক রয়েছে। শেখ হাসিনার সময়ে দুই দেশের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া রয়েছে। সম্পর্কের অনেক উন্নতি হয়েছে। দুই দেশের মধুর সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে মমতা তিস্তার পানি বাংলাদেশবাসীকে উপহার দেবেন বলে আমরা আশাবাদী। একসঙ্গে তিনজন বসলে দুই দেশের অনেক দ্বিপাক্ষিক সমস্যা মিটবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। গত ১০ বছরে দুই বাংলার মধ্যে সম্পর্ক আরও বেড়েছে। শুক্রবার কলকাতায় ‘বাংলাদেশ বইমেলা’র উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। এ দিন তার ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন কবি শঙ্খ ঘোষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, বাংলাদেশে কলকাতার উপ-রাষ্ট্রদূত তৌফিক হাসান, অধ্যাপক সামসুজ্জামান প্রমুখ। মেলা চলবে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। এবারের বইমেলায় পাঠক সমাবেশ, ভাষাচিত্র, সময়, প্রথমা ও ইকরিমিকরিসহ ৮০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। কলকাতার মোহরকুঞ্জে ১০ দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে ড. মোমেন নিজের পরিবারের সঙ্গে কলকাতার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কলকাতার এ বইমেলা দুই বাংলার সেতুবন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে। সাংস্কৃতিক ও মেধার আদান-প্রদান আরও বাড়বে। বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের পর এক প্রশ্নের উত্তরে ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতের ওপর বাংলাদেশ অনেকটা নির্ভর করে আছে। তিনি বলেন, ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে শেখ হাসিনা মায়ের মমতায় আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের এখন ফিরে যাওয়ার জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গারা মিয়ানমারকে বিশ্বাস করছে না। তাই তারা এমন পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে চাইছে না। মিয়ানমারের ওপর ভারতকে চাপ সৃষ্টির অনুরোধ করে মোমেন বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দুই দেশেরই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল করে ফেরত পাঠাতে পারে ভারত। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।