মধ্যরাতে ঘুমন্ত গার্মেন্টস কর্মীকে অ্যাসিড নিক্ষেপ

ছুটির দিনে সারা দিন বাড়ির কাজকর্ম শেষে মা আর ছোটবোনের সঙ্গে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিল গামের্ন্টস কর্মী সাথী আক্তার (১৯)। তবে এ শান্তির ঘুমই এখন তাকে নিয়ে গেছে মৃত্যুর দুয়ারে। ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে মধ্যরাতে দুর্বৃত্তের ছোড়া অ্যাসিডে ঝলছে গেছে তার হাত ও মুখ।

শুক্রবার রাত সোয়া ২টার দিকে গুরুতর আহতাবস্থায় সাথীকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবার। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কাটাখালী-ফেরাজীপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে সাথী।

সাথী আক্তারের মা জুলেখা বেগম বলেন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে নাঈমের সঙ্গে দুই বছর আগে বিয়ে হয় সাথীর। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য সাথীকে চাপ দিয়ে অত্যাচার শুরু করে নাঈম। মেয়ের জামাই একজন বখাটে ও নেশাখোর হওয়ায় সংসার বিচ্ছেদ করে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই রাস্তাঘাটে মেয়েকে বিরক্ত করতে শুরু করে নাঈম। তার সঙ্গে সংসার না করলে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় নাঈম।

এর জের ধরেই শুক্রবার মধ্যরাতে ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে তার মেয়ের মুখে অ্যাসিড মেরে হাত-মুখ ঝলছে দেয় নাঈম। এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

সাথীর বড়ভাই সোহেল হোসেন বলেন, তার বোন ধামরাই উপজেলার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। অফিসে যাওয়া-আসার সময় রাস্তা-ঘাটের বিভিন্ন জায়গায় তাকে উত্ত্যক্ত করে নাঈম। পুনরায় তাকে বিয়ে করে সংসার করার জন্য চাপ দিতে থাকে। তার এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শুক্রবার মধ্যরাতে নাঈম অ্যাসিড দিয়ে সাথীর হাত ও মুখ ঝলছে দেয়।

মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কাজী একেএম রাসেল বলেন, দাহ্য পদার্থে সাথীর হাত-মুখ ঝলসে গেছে। তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখানে তার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হবে।

সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনাটি তদন্তসাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।