পাবজি খেলতে না দেওয়ায় পরিবারের সবাইকে গুলি করে হত্যা করে

পাবজি খেলতে বাধা দেওয়ায় সম্প্রতি পাকিস্তানের এক কিশোর (১৪) পরিবারের সবাইকে গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনার পর দেশটির পুলিশ সরকারের কাছে পাবজি নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে।

আরব নিউজ এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।

গত ১৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশ থেকে এক নারী, তার ১১ বছরের দুই মেয়ে ও এক ছেলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বাড়ির মধ্যেই চারটি রক্তাক্ত দেহ পড়েছিল। তবে একই বাড়িতে থাকা ছোটছেলে অক্ষত ছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পুলিশের কাছে ছেলেটি প্রথমে জানায়, নিজের ঘরে সে ঘুমিয়ে ছিল। সকালে উঠে বাড়ির সবাইকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। কিন্তু কিশোরের কথাবার্তায় অসঙ্গতি খুঁজে পায় পুলিশ। পরে পুলিশের জেরার মুখে সে মা ও ভাইবোনদের গুলি করে হত্যার কথা স্বীকার করে।

পুলিশকে ওই কিশোর জানায়, অনলাইনে পাবজি খেলায় আসক্ত ছিল সে। এই নিয়ে মা প্রায়ই তাকে বকাবকি করতেন। ওই দিনও মা তাকে এ নিয়ে ভীষণ বকাবকি করেন। ক্ষুব্ধ হয়ে প্রথমে মা ও পরে পরিবারের বাকিদের গুলি করে হত্যা করে সে।

লাহোর পুলিশ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে ডন খবর প্রকাশ করেছে, খেলায় গুলি করার পরও পুনরায় জীবিত হয় এটা ভেবে সে সবাইকে গুলি করে।

ঘটনার পর পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, পাবজি খেলায় আসক্ত ওই কিশোর স্বীকার করেছে যে গেমের প্রভাবে তার মা এবং ভাইবোনদের হত্যা করেছে। সারাদিন অনলাইন গেম খেলার কারণে তার কিছু মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল।

পুলিশ জানায়, নিহত নারী একজন তালাকপ্রাপ্তা ছিলেন। তিনি প্রায়ই ছেলেটিকে পড়াশোনায় মনোযোগ না দিয়ে বেশিরভাগ সময় পাবজি খেলায় ব্যস্ত থাকার জন্য বকাবকি করতেন।

পরিবারের সুরক্ষার জন্য ওই নারী লাইসেন্স করা পিস্তলটি নিজের কাছে রেখেছিলেন। ওই কিশোর জানত পিস্তলটি কোথায় রাখা হয়। সবাইকে গুলি করে হত্যা করার পর পিস্তলটি ড্রেনে ফেলে দেয় সে।

পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা ইমরান কিশোহর সাংবাদিকদের বলেন, এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম না। এ কারণে তারা পাবজি নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছেন। এর আগে একবার পাকিস্তানের টেলিকম কর্তৃপক্ষ গেমটি নিষিদ্ধ করেছিল।

পাবজি অনলাইনে একাধিক খেলোয়াড়ের যুদ্ধ বিষয়ক একটি খেলা। এখানে শুধুমাত্র বিজয়ী বেঁচে থাকেন। ভারত, চীনসহ কয়েকটি দেশে পাবজি নিষিদ্ধ।