তুরস্কের মসজিদে আশ্রয় নিলেন ইসরায়েলি ধর্মযাজক

তুরস্কে গত কয়েকদিন ধরেই ভারি তুষারপাত হচ্ছে। রাস্তাঘাট বরফের চাদরে ঢেকে গেছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই ইস্তাম্বুল শহরে প্রবল তুষারঝড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সময় শত শত মানুষ মসজিদে আশ্রয় নেন। এদের মধ্যে এক ইসরায়েলি ধর্মযাজকও ছিলেন। ইসরায়েল এলবাউম নামের ওই ধর্মযাজক কোশার খাবারের নিয়ন্ত্রক হিসেবে ইস্তাম্বুলে কাজ করছিলেন। বিভিন্ন কোম্পানি ইহুদি আইন মেনে চলছে কিনা তা যাচাই করছিলেন তিনি। এই কাজটা অনেকটা মুসলিমদের হালাল খাবারের মানদণ্ড যাচাইয়ের মতোই।

কাজ শেষ করেই ৬২ বছর বয়সী এই যাজকের ফ্লাইট ধরার কথা ছিল। কিন্তু প্রচণ্ড তুষারঝড়ে রাস্তায় যানজট শুরু হয়। খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিমানবন্দরও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এলবাউমকে স্থানীয় সময় বিকাল ৩টা থেকে পরদিন রাত ২টা পর্যন্ত প্রায় ১১ ঘণ্টা গাড়িতে বসেই অপেক্ষা করতে হয়েছিল। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থিত আলি কুসকু মসজিদে নিয়ে যান সেনারা। রাতভর ওই মসজিদে থাকার অভিজ্ঞতার কথা আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন এলবাউম।

তিনি জানান, আরও অনেকের সঙ্গে মধ্যরাত ৪টার দিকে তিনি ওই মসজিদে আশ্রয় নেন। তিনি বলেন, সে সময় প্রচণ্ড ঠান্ডা ছিল। অন্যদের মতো আমাকেও জুতা খুলে প্রবেশ করতে হয়েছিল। তবে সেখানকার কার্পেট বেশ উষ্ণ ছিল। লোকজন আমার দিকে একটু তাকিয়েছিল কারণ আমি তাদের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। তবে কেউ কিছু বলেনি এবং তারা হাসছিল। সবকিছু খুব ভালো ছিল। মসজিদে অন্যরা যখন ঘুমাচ্ছিলেন তখন তিনিও কিছু সময় বিশ্রাম নেন। ফজরের সময় মুসলিমরা যখন নামাজ আদায় করছিলেন তিনিও তখন প্রার্থনা সেরে নেন। তিনি বলেন, আমরা একই সৃষ্টিকর্তার প্রার্থনা করি। তাই আমি মনে করি এটা কোনো সমস্যা নয়। বরং একসঙ্গে থাকা, প্রার্থনা করা, নাচগান করা এবং একসঙ্গে হাসা সুন্দর একটি বিষয়।