বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা

মানুষের জীবনে বন্ধু এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ইসলামে বন্ধু নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ কিয়ামতের দিন তার সঙ্গেই মিলিত হবে, যাকে সে দুনিয়াতে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে।’ (বুখারি) তাই বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা জরুরি।

মিথ্যাবাদী, নেশাখোর, পরনিন্দাকারী, চোর, ডাকাত, দুশ্চরিত্র, বখাটে ইত্যাদি অসৎদের বন্ধু বানানো যাবে না। হাদিসে এসেছে, ‘মানুষ নিজের বন্ধুর আচরণে অভ্যস্ত হয়ে থাকে। এ জন্য সবার ভেবে দেখা উচিত, কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করা হচ্ছে।’ (তিরমিজি) বর্তমানে তরুণ-যুবক প্রজন্ম যেভাবে নেশাগ্রস্ত হচ্ছে, মেয়েরা উত্ত্যক্তের শিকার হচ্ছে, খুনখারাবি হচ্ছে, সর্বোপরি অধঃপতনের অতল গর্তে পতিত হচ্ছে, এর অন্যতম কারণ অসৎ বন্ধুদের সঙ্গ।

মহানবী (সা.) বলেন, ‘ভালো বন্ধু এবং মন্দ বন্ধুর উদাহরণ আতর বিক্রেতা এবং আগুন জ্বালানো কামারের মতো। আতর বিক্রেতা হয়তো তোমাকে কিছু উপহার দেবে অথবা তুমি তার থেকে কিছু কিনবে অথবা কমপক্ষে আতরের সুঘ্রাণ হলেও পাবে। আর আগুন প্রজ্বালনকারী হয়তো তোমার কাপড় জ্বালিয়ে দেবে অথবা তার থেকে দুর্গন্ধই পাবে।’ (আবু দাউদ) তাই ভালো মানুষের সঙ্গেই বন্ধুত্ব করা উচিত।

এর অর্থ কিন্তু এই নয় যে, খারাপ মানুষদের একেবারে এড়িয়ে চলতে হবে। বরং তাদের কাছে যেতে হবে; বুঝিয়ে-সুঝিয়ে সৎপথে আনার চেষ্টা করতে হবে। মানুষ মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই। হাদিসে এসেছে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, ‘আমার সম্মান ও মর্যাদার খাতিরে দুনিয়াতে যারা পরস্পর ভালোবাসাসুলভ আচরণ করত, তারা কোথায়? আজ আমি তাদের আমার আরশের ছায়া দেব, আজ আমার ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া নেই।’ (মুসলিম)

লেখক: মুনীরুল ইসলাম,সভাপতি, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম