ছয় মাসে আমানত কমেছে ৪১৯ কোটি টাকা

নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত কমে যাচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এই ৬ মাসে আমানত কমেছে ৪১৯ কোটি টাকা। গত বছরের জুন থেকে এ বছরের জুন পর্যন্ত এই এক বছরের হিসাবে আমানত কমেছে ৫১৭ কোটি টাকা। আমানত কমার পাশাপাশি বেড়েছে ঋণের স্থিতি। এদিকে ঋণ আদায়ও কমে গেবুধবার রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতি ৩ মাস পরপর ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সূত্র জানায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের টাকা দিতে পারছে না। একমাত্র পিকে হালদারের কারণে ৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কর্তৃক অর্থ লুটের ঘটনাও ঘটেছে। এসব কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি গ্রাহকদের আস্থায় চিড় ধরেছে। যে কারণে এগুলোতে আমানত রাখার প্রবণতা কমে গেছে। তবে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুব ভালো করেছে। দেশে বর্তমানে ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত বছরের জুনে আমানত ছিল ৪২ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা। গত জুনে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। গত এক বছরের ব্যবধানে আমানত কমেছে ৫১৭ কোটি টাকা। গত বছরের ডিসেম্বরে আমানত ছিল ৪২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে আমানত কমেছে ৪১৯ কোটি টাকা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চলতি আমানত নিতে পারে না। শুধু মেয়াদি আমানত নিতে পারে। যে কারণে মেয়াদি আমানতই এদের প্রাণ। সেই মেয়াদি আমানতের হারও কমে যাচ্ছে। গত বছরের জুনে মেয়াদি আমানত ছিল সাড়ে ৯৮ শতাংশ। গত জুনে তা কমে ৯৭ দশমিক ৩৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

আলোচ্য সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত কমলেও ঋণের স্থিতি বেড়েছে। ঋণ আদায় কম হওয়ায় ঋণের স্থিতি বেড়েছে। গত এক বছরের ব্যবধানে ঋণের স্থিতি বেড়েছে ২ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। গত বছরের জুনে মোট ঋণ ছিল ৬৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা। গত জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮০ কোটি টাকা। ঋণ বাড়লেও আদায় কমেছে। গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ঋণ আদায় বেড়েছিল ২০ দশমিক ২৬ শতাংশ। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে বেড়েছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। কিন্তু এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে তা কমেছে ৯ শতাংশ।