যে কাজগুলো রিজিকের সংকট সৃষ্টি করে

আল্লাহতায়ালা সৃষ্টি জগতের মালিক। সৃষ্টির রিজিকের ব্যবস্থাও তিনিই করেন। অনেকের অভিযোগ, উপার্জন ভালো করার পরেও অভাব দূর হয় না। এ ক্ষেত্রে সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ মতো না চলাই মূল কারণ। আল্লাহ মানুষের আমলের ওপর রিজিকের হ্রাস-বৃদ্ধি করে দেন। ইসলামের বিধানের আলোকে রিজিকের সংকট সৃষ্টির কারণগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলো-

প্রাপ্ত রিজিক ও তাকদিরের ওপর সন্তুষ্ট না থাকা

মানুষের জন্য আল্লাহ রিজিক বণ্টন করেন। আল্লাহর রিজিকের ওপর মানুষ সন্তুষ্ট থাকলে তার রিজিকে বরকত হয়। আর ওই রিজিকের ওপর সন্তুষ্ট না থাকলে জীবিকার বরকত কমে যায়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ বান্দাকে দেওয়া জিনিসের মাধ্যমে পরীক্ষা করে থাকেন। যা তার জন্য নির্ধারণ তাতে যদি সে সন্তুষ্ট থাকে তবে আল্লাহ বরকত দান করেন এবং তা আরও বৃদ্ধি করে দেন। যদি সে অসন্তুষ্ট হয় তাহলে বরকত তুলে নেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২০২৭৯)

ভোরে ঘুম থেকে না ওঠা

ভোরে ঘুমালে অকল্যাণ হয়। এটি শয়তানের কাজে সহযোগিতার করার মাধ্যম। হজরত সাখর আল গামিদী (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মাতকে ভোরের বরকত দান করুন। রাসূলুল্লাহ (সা.) কোনো বাহিনীকে কোথাও পাঠালে দিনের প্রথমভাগেই পাঠাতেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ২৬০৬)।

সুদের লেনদেন করা

আল্লাহ সুদকে নিঃশেষ করেন ও সদকায় প্রবৃদ্ধি দান করেন। (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৬)। সুদের রয়েছে অভ্যন্তরীণ ও আধ্যাত্মিক ক্ষতি। সদকায় রয়েছে বরকত। মানুষ সম্পদ বৃদ্ধির জন্য সুদ গ্রহণ করে। অথচ সুদের আদান-প্রদানে জীবিকায় বরকত চলে যায়।

জাকাত না দেওয়

সম্পদের হক হচ্ছে জাকাত। জাকাত আদায় না করায় ইহকালীন ও পরকালীন আজাব-গজব আপতিত হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, কোনো জাতি যখন জাকাত আদায় বন্ধ করে আল্লাহ তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেন।ইবনে মাজাহর এক হাদিসে বলা হয়েছে, যদি ভূপৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকত তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না।

অপচয় করা

রিজিকের সংকীর্ণতার আরও একটি কারণ হচ্ছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ করা। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আত্মীয়কে হক দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও। কিছুতেই অপচয় করো না। নিশ্চয় অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালনকর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সূরা ইসরা : আয়াত ২৬-২৭)।

অন্যায় পথে সম্পদ আহরণ

অন্যায় পথে সম্পদ অর্জন করলে আল্লাহ তার সম্পদ থেকে বরকত তুলে নেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি ন্যায় পন্থায় সম্পদ অর্জন করে আল্লাহ তার সম্পদে বরকত দান করেন। যে ব্যক্তি অন্যায় পথে সম্পদ অর্জন করে সে হচ্ছে ওই ব্যক্তির মতো যিনি আহার করেন, কিন্তু তৃপ্ত হয় না। (মুসলিম, হাদিস : ১০৫২)

এছাড়া দুনিয়াকে প্রাধান্য দেওয়া, আত্মীয়তা ছিন্ন করা, পাপাচারে লিপ্ত হওয়া, প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি করা, অধিক কসম খাওয়া, কৃপণতা ও ব্যয়কুণ্ঠতার কারণে মানুষের রিজিকে সংকট সৃষ্টি হয়। আল্লাহ আমাদের উত্তম পন্থায় রিজিক বৃদ্ধির তাওফিক দিন। আমিন