সেহরির সময় মাইকে অতিরিক্ত ডাকাডাকি, যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

ভোর রাতে সেহরির সময় মসজিদের মাইকে অতিরিক্ত ডাকাডাকি এবং গজল গাওয়ার প্রথা বন্ধ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামি বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ। 

ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে তার কথার সঙ্গে সহমতের কথা জানালেও কেউ কেউ দ্বিমতের কথা জানিয়েছেন।  

পাঠকদের জন্য শায়খ আহমাদুল্লাহর স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো—

ভোর রাতে সাহরির সময় মসজিদের মাইকে অতিরিক্ত ডাকাডাকি এবং গজল গাওয়ার প্রথা বন্ধ হওয়া উচিত।

একটা সময় মানুষের প্রয়োজনেই হয়তো ডাকাডাকির এই প্রথা চালু হয়েছিল। কিন্তু এখন প্রতিটা বাড়িতেই ঘুম ভাঙানোর মতো দু চারটা অ্যালার্ম ঘড়িবিশিষ্ট মোবাইল ফোন আছে। এ সময়ে এসে ঘুম ভাঙানোর জন্য মাইকের মাত্রাতিরিক্ত ডাকাডাকি নিষ্প্রয়োজন; বরং বিরক্তিকর।

কারণ—সাহরির ওই সময়টা তাহাজ্জুদ এবং দোয়া কবুলের সময়। ওই সময় মাইকের আওয়াজ ইবাদতকারীদের ইবাদতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তা ছাড়া ঋতুবতী নারী, অসুস্থ, শিশু এবং অমুসলিমদের ঘুমেরও ব্যাঘাত সৃষ্টি করে মাইকের আওয়াজ।

যেখানে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে উচ্চ স্বরে কোরআন তিলাওয়াত করতে নিষেধ করেছেন স্বয়ং রাসুল সা., সেখানে অনেক সময় ধরে মাইক বাজানো কতটা যুক্তিসংগত এবং ইসলাম-সংগত?

হ্যাঁ, সাহরির শুরুতে এবং শেষে এক-দু বার ডেকে দেওয়া যায়। কিন্তু লাগাতার ডাকাডাকি, গজল, হামদ-নাত গাওয়া মোটেও কাম্য নয়। আমাদের এই সকল কর্মকাণ্ডের জন্য অনেকে ইসলামের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে যায়।

এখন আর কষ্ট করে গজল গাইতে হয় না। ইউটিউবে গজল ছেড়ে দিয়ে মুয়াজ্জিন সাহেবরা দায়িত্ব শেষ করেন। ফলে এর প্রাদুর্ভাব আরও বেড়েছে।

অনেকে হয়তো আজানের কথা বলবেন—ফজরের আজানের কারণেও তো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। আসলে আজান এবং সাহরির ডাকাডাকি দুটো ভিন্ন জিনিস।

আজান ইসলামের শি'আর। তাছাড়া আজান খুবই সংক্ষিপ্ত সময় নিয়ে হয় এবং ফজরের আজান গভীর রাতেও দেওয়া হয় না। এ কারণে দুটোকে এক করে দেখার সুযোগ নেই।

ইসলাম পরিমিতিবোধের ধর্ম। ইসলামের এই পরিমিতিবোধ সমাজের সকল স্তরে প্রয়োগ হলে আমাদের জীবন সহজ এবং সাবলীল হবে।