এক সালামে ৩০ নেকি

একটি শক্ত পাথরে এক ফোঁটা দুফোঁটা করে পানি পড়তে পড়তে এক সময় সেই পাথরের গায়েও ক্ষত সৃষ্টি হয়। সালাম হলো এমন একটি বীজ যা পাথরের মতো কঠিন হৃদয়ে অঙ্কুরিত করে ভালোবাসা ডালপসালাম শব্দের অর্থ হলো-শান্তি, কল্যাণ, প্রশান্তি, দোয়া ইত্যাদি। সালাম হলো পরস্পর দোয়া আদান-প্রদান করা। একে অপরের জন্য শান্তি এবং কল্যাণের দোয়া করা।

সালামের মাধ্যমে অন্তর থেকে বিদূরিত হয় হিংসা-বিদ্বেষ। মিটে যায় হৃদয়ে লালিত সীমাহীন শত্রুতা। সালামের মাধ্যমে বড়দের প্রতি ছোটদের তাজিম-সম্মান এবং ছোটদের প্রতি বড়দের অন্তরে স্নেহ তৈরি হয়। সমবয়সিদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভ্রাতৃত্বের সুদৃঢ় বন্ধন।

প্রিয় নবি (সা.) সদাসর্বদা কারও সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হলে আগে সালাম দিতেন। হোক সে পরিচিত কিংবা অপরিচিত ছোট কিংবা বড়।

আমাদের সমাজে বড়দের সালাম দেওয়ার সুন্নত চালু আছে। তবে বড়দের পক্ষ থেকে ছোটদের সালাম দেওয়ার সুন্নতের ওপর আমল নেই বললেই চলে। অনেকেই ছোটদের থেকে সালামের অপেক্ষায় থাকেন কিন্তু তাকে সালাম না দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। অথচ রাসূল (সা.) নিজে ছোটদের সালাম দিয়েছেন।

সাহাবায়ে কেরামগণ (রা.) থেকেও এ সুন্নত জারি আছে। যার প্রমাণ হাদিসে পাওয়া যায়। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে রাসূল (সা.)-একদল শিশুর পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে তাদের সালাম দিয়েছেন। (মুসনাদে বাযযার।) অন্য বর্ণনায় হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একবার তিনি একদল শিশুর পাশ দিয়ে অতিক্রমকালে তাদের সালাম দিলেন এবং বললেন নবি (সা.) এমনই করতেন। (সহিহ বুখারি-৬২৪৭)।

একবার এক ব্যক্তি রাসূলের (সা.) কাছে এসে বললেন, আসসালামু আলাইকুম। তখন তিনি বললেন, লোকটির জন্য ১০টি নেকি লেখা হয়েছে। এরপর আরেক ব্যক্তি এসে বললেন, ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আল্লাহর রাসূল (সা.) তার জওয়াব দিয়ে বললেন, তার জন্য ২০টি নেকি লেখা হয়েছে। এরপর আরেক ব্যক্তি এসে বললেন ওয়া বারাকাতুহু।

রাসূল (সা.) তারও জওয়াব দিয়ে বললেন, লোকটির জন্য ৩০টি নেকি লেখা হয়েছে। সালামের ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূল (সা.) বলেন, যখন দুজন মুসলমানের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়, সালাম-মুসাফাহা (হ্যান্ডশেক) করে তখন একে অপর থেকে পৃথক হওয়ার আগেই তাদের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।