যেভাবে কবর জিয়ারত করবেন

প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মৃত্যুর পরবর্তী ঠিকানা সাড়ে তিন হাত মাটির ঘর। কবর! নাম শুনলে যেন গা শিউরে ওঠে। কেউ কবরে শুতে রাজি আছে এমন ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। নিয়তির নির্মম পরিহাস। ইচ্ছা থাকুক বা না থাকুক মুসলিম হলে কবরে অবশ্যই শুতে হমৃত ব্যক্তির নাজাতের উপায় হিসেবে আপনজনের দোয়া রহমত হিসেবে কাজে আসে। মুসলিম শরিফে হজরত আয়েশা (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে, তিনি একদিন হজরত রাসুল (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুল (সা.)! কবর জিয়ারতের সময় আমি কি বলব? 

রাসুল (সা.) বললেন, সালাম হউক মুমিন ও মুসলিমদের বাসস্থানের অধিবাসীদের ওপর এবং দয়া করুন আল্লাহ আমাদের মধ্যে থেকে যারা প্রথমে কবরে গিয়েছে তাদের প্রতি এবং যারা কবরে পরে আসবে। আমরাও ইনশাআল্লাহ শিগগিরই তোমাদের (কবরবাসীর) সঙ্গে যুক্ত হব।

বায়হাকী শরিফে হজরত নোমান (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে হজরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক জুমার দিনে নিজ মাতা-পিতার অথবা তাদের মধ্যে যে কোনো একজনের কবর জিয়ারত করবে, তাকে মাফ করে দেওয়া হবে এবং তাকে পিতা-মাতার প্রতি উত্তম ব্যবহারকারী হিসেবে নাম লিখা হবে। 

ইবনে মাজাহ শরিফে হজরত মাসুদ (রা.) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে হজরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, কবর জিয়ারত দুনিয়ার আসক্তি কমিয়ে দেয় এবং আখেরাতকে স্মরণ বাড়িয়ে দেয়। 

হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে হজরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ বেহেশতে তার কোনো কোনো বান্দার মর্যাদা বাড়িয়ে দিবেন, বান্দা তার অতিরিক্ত মর্যাদার কারণ আল্লাহর নিকট জানতে চাইলে আল্লাহ বলবেন, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা চেয়েছে। এর জন্য বেহেশতে তোমার

যেভাবে কবর জিয়ারত করবেন

কবরস্থানে যাওয়ার পর সর্বপ্রথম জিয়ারতের দোয়া পড়বেন। এরপর কবরবাসীর ইসালে সওয়াবের নিয়তে দরুদ শরিফ ও বিভিন্ন সুরা ইত্যাদি পড়বেন। মৃতের বা কবরবাসীর মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন।

দরুদ শরিফ, সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, সূরা ইখলাস ও যেসব সূরা সহজ মনে হয়, সেগুলো পড়ে মৃত ব্যক্তির রুহের ওপর সওয়াব পাঠিয়ে দিন।

চাইলে হাত না তুলেও মনে মনে দোয়া করতে পারেন। তবে কবর সামনে রেখে দুই হাত তুলে দোয়া করা উচিত নয়। তাই কবরকে পেছনে রেখে কিংবা কবরের দিকে পিঠ দিয়ে এরপর কিবলামুখী

কবর জিয়ারতের দোয়া

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার কবরবাসীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই দোয়া পাঠ করেন—

السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُورِ يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالأَثَرِ

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, একবার রাসুল (সা.) একটি কবর জিয়ারতে গিয়ে বলেন—

السَّلامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤمِنينَ وإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاحِقُونَ

বাংলা উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম দারা ক্বাওমিম মুমিনিন ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লা-হিকুন।

অর্থ : মুমিন এই ঘরবাসীদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইনশাআল্লাহ আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হবো। (সহিহ মুসলিম : ২৪৯)