কুলাউড়ায় জঙ্গি সন্দেহে ১৭ জন আটক

জঙ্গি সন্দেহে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের সেই জঙ্গি আস্তানা থেকে পলায়ন করা ১৭ জনই জঙ্গি।তাদের মধ্যে সিরাজগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক সোহেল তানজিমও রয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আব্দুল আহাদ মেন্দি নামের একজন পঙ্গুও রতিনি জঙ্গিদের কমান্ডার নামে পরিচিত জানা গেছে। আটককৃতদের বর্তমানে কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখা হয়েছে।

এর আগে শনিবার সকালে কর্মধা ইউনিয়নের বাইশালী টিলায় থাকা জঙ্গি আস্তানা থেকে নারী-পুরুষসহ ১০ জঙ্গিকে আটক করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট, সোয়াট ও পুলিশ। এসময় অভিযানের খবর পেয়ে জঙ্গিদের সঙ্গে থাকা অনেকেই পাহাড়ের ভেতরে আত্মগোপনে চলে যায়।

অভিযানের পর থেকে স্থানীয় এলাকায় আতঙ্ক কাজ করছিল। সবার ধারণা ছিল পাহাড়ের ভেতরে সেই আস্তানা থেকে জঙ্গিদের কমান্ডার হিসেবে পরিচিত আব্দুল আহাদ মেন্দিকে কাঁধে বহন করে চলে যায় তারা।

জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টার দিকে কর্মধা ইউনিয়নের আছকরাবাদ চা-বাগানের বাশফিল্ড খেলার মাঠ থেকে জঙ্গিরা ৫টি সিএনজিঅটোরিকশায় করে পলায়ন করার চেষ্টা করছিল। এসময় সিএনজিচালকরা তাদেরকে নিয়ে সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদের আসে।

পরে কুলাউড়া থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা তাদের আটক করে। খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

সিএনজিচালক রবিউল্লাহ বলেন, ‘আটক অপরিচিত লোক তাদের একজনকে কাঁধে বহন করে নিয়ে গাড়িতে আসে। আমার গাড়িতে তিনজন উঠে। তারা আমাদের জানায় বনভোজনে এসেছে।

তারা মৌলভীবাজার যাবে বলছে। আমরা তাদের বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞেস করে কথাবার্তা সন্দেহজনক হলে কৌশলে পরিষদে নিয়ে আসি।’ 

আরেক সিএনজিচালক আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার গাড়িতে ছয়জন অপরিচিত লোক উঠেন। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক রয়েছেন। আমিও তাদের নিয়ে আসি পরিষদে।’

আরেক চালক জানান, ‘আমার গাড়িতে ল্যাংড়া (পঙ্গু) একজন ব্যক্তি উঠেছিল তাদের সহযোগীদের নিয়ে। আমি তাদেরকে রবিরবাজার থেকে পরিষদের ভেতর নিয়ে আসি।’

কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম আজাদ ১৭ জন জঙ্গি আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আটককৃতরা পরিষদের হলরুমে আছে। তাদেরকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। প্রায় দেড়মাস আগে ওই জঙ্গিরা কর্মধা ইউনিয়নের বাইশালী টিলায় এক প্রবাসীর ৫০ শতক জায়গা ক্রয় করে বসতি স্থাপন করে। অভিযানের পর থেকে কুলাউড়া থানা পুলিশ ও আমাদের নজরদারি ছিল। রবিবার রাতে তারা পাহাড় থেকে নেমে অন্যত্র পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেছিল।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করার কাজ চলছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।’