মার্কিন দূতাবাসের মামলায় খুলনার তরুণ গ্রেপ্তার

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ডিসকর্ড অ্যাপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এক কিশোরীর (১৩) সঙ্গে যোগাযোগ হয় খুলনার তরুণ মো. সামিরের (২০)। একপর্যায়ে ওই তরুণীকে প্রলুব্ধ করে তাকে দিয়ে নগ্ন ছবি তুলিয়ে নেন সামির। ওই কিশোরীর মায়ের যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটিতে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে গুলশান থানায় একটি জিডি করেন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা মাইকেল লি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে খুলনা থেকে সামিরকে গ্রেফতার করে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।গ্রেপ্তারের সময় সামিরের কাছ থেকে মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন দেশের অন্তত ৩০ কিশোরীর দেড় শতাধিক নগ্ন ছবি উদ্ধার করা হয়। 

জানা গেছে, ডিসকর্ডে কিশোরীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ফাঁদে ফেলে তাদের নগ্ন ছবি সংগ্রহ করেন সামিরসিটিটিসি জানায়, গত ২১শে আগস্ট খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার নিউমার্কেট এলাকার নিজ বাসা থেকে সামিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতের নির্দেশে তার দুদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মাইকেল লি গত ২৬ জুলাই গুলশান থানায় একটি জিডি করেন। তাতে অভিযোগ করা হয়, সামির পরিচয়ে বাংলাদেশের এক নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে প্রলুব্ধ করে তাকে দিয়ে তার নগ্ন ছবি তুলে নিয়েছেন। ডিসকর্ড অ্যাপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ওই কিশোরীর সঙ্গে সামিরের যোগাযোগ ও সম্পর্ক হয়। পরে তিনি ওই অ্যাপ এবং তার ই-মেইলে কিশোরীর তোলা নগ্ন ছবি নিয়ে নেন। কিশোরীর মায়ের যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটিতে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে গুলশান থানায় ওই জিডি করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সিটিটিসিকে এর তদন্তের দায়িত্ব দেন ডিএমপি কমিশনার।তদন্তে সিটিটিসি সামির সম্পর্কে অভিযোগের সত্যতা ও বিস্তারিত তথ্য পায়। এরপর ২১ আগস্ট মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা লি বাদী হয়ে মো. সামিরকে আসামি করে গুলশান থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে খুলনার সোনাডাঙ্গার বাসা থেকে সামিরকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসি। পরে তার কাছ থেকে উদ্ধার করা ফোন ও ল্যাপটপে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ৩০ কিশোরীর ১৬৪টি পর্নো ছবি পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সামির জানিয়েছে, এসব ছবি সংগ্রহে রাখা তার শখ ছিল।

এ ব্যাপারে সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সামির ২০২১ সালে রাজশাহীর একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে তিনি বর্তমানে প্রবাসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তার মা-বাবা তাকে বাইরে কোথাও যেতে দিতেন না। একাকিত্বের কারণে মুঠোফোনে আসক্তি থেকে তার বিকৃত মানসিকতা গড়ে ওঠে।