স্বায়ত্তশাসন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল, ফিরিয়ে দিতে হবে কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। আজ সোমবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নরেন্দ্র মোদির বিজেপি সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তকেই বহাল রাখার ঘোষণা দেন। পাশাপাশি অতি দ্রুত জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়ে আগামী বছর মুসলিম অধ্যুষিত এই অঞ্চলটিতে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশও দিয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কৌল, সঞ্জীব খান্না, বিআর গাভাই এবং সূর্যকান্তের সমন্বয়ে গঠিত পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ দেশটির সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার চ্যালেঞ্জ করে পিটিশনের রায়ে এই নির্দেশ

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের আগস্টে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলের রাজ্যত্ব ও বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হয়। সেই সঙ্গে অঞ্চলটির স্থায়ী বাসিন্দাদের বিশেষ অধিকার ও সুযোগ-সুবিধার নিশ্চিতের স্বীকৃতি রয়েছে এমন অনুচ্ছেদও (৩৫ /এ) বাতিল করা হয়। এর পর থেকে অঞ্চলটি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে রয়েছে। 

রায় পড়ার সময় ভারতের প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের হাতে যে সমস্যাটি রয়ে গেছে, সেটি হলো, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা অস্থায়ী কি না, ৩৭০ (১) (ডি) অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে বিধানসভার মাধ্যমে গণপরিষদ প্রতিস্থাপন বৈধ কি না এবং গণপরিষদের সুপারিশের অভাবে জম্মু-কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতির শাসন বৈধ কি না। 

এসব প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, ২০১৯ সালের ঘোষণা ছিল (ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের) একীকরণ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পরিণতি এবং এটি ক্ষমতার একটি বৈধ অনুশীলন। তবে আদালতের রায়ে জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বদলে রাজ্য হিসেবে শাসনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছেন। 

সোমবার দেওয়া রায়ে আদালত বলেছে, কাশ্মীরের ওপর থেকে নয়াদিল্লির সীমিত স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করে আগামী বছর জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। রায়ে আরও বলা হয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি এবং যত দ্রুত সম্ভব অন্য ভারতীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে সমান হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। 

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে আরও বলা হয়, জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব অন্যান্য রাজ্যের থেকে আলাদা নয়। জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের ইউনিয়নে যোগদানের সময় সার্বভৌমত্ব বা অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্বের উপাদান ধরে রেখেছিল কি না—এ প্রশ্নের বিষয়ে আমরা ‘না’ বলছি। এর অর্থ হলো, জম্মু-কাশ্মীরের সার্বভৌমত্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যের থেকে আলাদা না হওয়ায় এবং কাশ্মীর যখন ভারতে যোগ দেয় তখন আলাদাভাবে সার্বভৌমত্বের বিষয়টি সামনে না আসায় কাশ্মীরকে আলাদা সার্বভৌম অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না।