হবিগঞ্জে সাংবাদিক জুনাইদ হত্যার ৭বছর: বিচারের অপেক্ষায় পরিবার ও সহকর্মীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি :নবীগঞ্জের বহুল আলোচিত সাংবাদিক জুনাইদ আহমদ হত্যা মামলার রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন তার পরিবার ও সহকর্মীরা। দীর্ঘ সাত বছর পর রোববার (২৮ জুলাই) হবিগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতে এ মামলার শুনানি অনুষ্টিত হবে। উক্ত শুনানি শেষে বিচারের রায়ের দিন ধার্য্য করা হবে। জুনাইদের পরিবার ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। জানা যায়, ২০১২ ইং সালের ১০ জুলাই সাংবাদিক জুনাইদ আহমদ বাড়ি থেকে বের হয়ে জেলা সদর হবিগঞ্জে যান। ওই রাতেই দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে লাশের আলামত নষ্ট করার জন্য শায়েস্থাগঞ্জ রেল লাইনে ফেলে রাখে। পরদিন ১১ জুলাই সকালে সাংবাদিক জুনাইদ আহমদের মৃতদেহ প্রায় ২০ টুকরা অবস্থায় রেলওয়ে পুলিশ উদ্ধার করেন। ঘটনার শুরুতেই জুনাইদ আহমদের পরিবার এটাকে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে দাবী করে আসছিল। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সুত্র ধরে জুনাইদের ভাই মোজাহিদ আহমদ বাদী হয়ে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ আদালতে একই গ্রামের ফরিদ উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি এফআইআর গণ্যে রুজু করার জন্য জিআরপি থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন। মামলার খবর পেয়েই প্রধান আসামী ফরিদ লন্ডনে পালিয়ে যায়। অপর আসামীরাও আত্মগোপন করে। এদিকে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকায় জুনাইদের পরিবার তৎকালিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহি উদ্দিন খান আলমগীরের কাছে উক্ত হত্যাকান্ডের বিচার ও আসামীদের গ্রেফতারের আবেদন করেন। মন্ত্রী এক মাসের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতারে সংশ্লিষ্ট পুলিশকে নির্দেশ দিলেও কোন ফল হয়নি। এক পর্যায়ে নিহত জুনাইদের পরিবারের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাহুবল থেকে পুলিশ মামলার ২নং পলাতক আসামী আব্দুল হামিদকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। পরে রেলওয়ে পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ডের আবেদন করে তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়। রিমান্ডে নিয়ে ওই কর্মকর্তা হত্যাকান্ডে কোন প্রকার ক্লু-উদঘাটন না করে আসামীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন বলে অভিযোগ উঠে। এরই প্রেক্ষিতে জুনাইদের পরিবার বাংলাদেশ রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি সোহরাব হোসেন এর নিকট অভিযোগ দিলে তিনি নিহত সাংবাদিকের পরিবারকে শান্তনা দিয়ে এই হত্যাকান্ডের বিচারের আশ্বাস প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে ডিআইজি সোহরাব হোসেন শায়েস্থাগঞ্জে পৌঁছেন। তিনি এ সময় বলেন- সাংবাদিক জুনাইদ আহমদ হত্যাকান্ডের বিষয়ে কারো সাথে আপোষ হবে না। প্রয়োজনে সংঘবদ্ধভাবে পলাতক আসামীকে আটক করে পুলিশকে জানানোর জন্য সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। এ মামলার প্রধান আসামী ফরিদ লন্ডনে পলাতক, অপর আসামী বাহুবলের মাদক সম্রাট আব্দুল হামিদকে স্থানীয় জনতা আটক করে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। প্রায় বছর খানেক জেল খেটে বাহিরে বের হলে স্থানীয় লোকজন তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে গনপিটুনি দিয়ে মেরে পেলেন। ৩য় আসামী বাদশা ৬মাস জেল কাটার পর জামিনে মুক্তি পায়। ৪র্থ আসামী রাহুলও ৬ মাস জেল কাটার পর জামিনে মুক্ত রয়েছে। এামলার বাদী মোজাহিদ আহমদ বলেন, আমি আশাবাদী আজকে শোনানী শেষে রায়ের তারিখ শিগগিরই ঘোষনা করা হবে। আমরা মামলায় আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করছি।