প্রবাসী কর্মীর মৃত্যুর পরও প্রতারণা!

প্রবাসী কর্মীর মৃত্যুর পরও প্রতারণা!

প্রবাসী কর্মীর মৃত্যুর পরেও তাকে নিয়ে চলে প্রতারণা। প্রবাসী কর্মীর মৃত্যু হলে দ্রুত লাশ দেশে প্রেরণ এবং বকেয়া বেতন বা ক্ষতিপূরণ পেতে সহযোগিতার নামে চলে প্রতারণা।

টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মালয়েশিয়া প্রবাসী হালিম (৪৬), তিন মাস আগে দেশে ছুটিতে গিয়েছিলেন। ১৭ জুলাই দেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মস্থলে ফিরছিলেন। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পরিবারের সবাই বিদায় জানালেন। মালয়েশিয়া বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন করে বাইরে এসে বিমানবন্দরে একটি রেস্টুরেন্টে ব্যাগ রেখে ওয়াশরুমে যান এবং সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বিমানবন্দর পুলিশ তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ চেকআপ করে জানায় হালিম কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন। হালিমের মরদেহ মালয়েশিয়ার সারডাং হাসপাতালে রাখা হয়েছে। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে মরদেহ বাংলাদেশে প্রেরণ করা হয় না। সরকারের বিধি অনুযায়ী মালয়েশিয়ায় দাফন করা হয়।

হালিমের স্ত্রী রোমা বেগম মরদেহ দেশে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেছেন। হালিমের দুই ছেলে এক মেয়ে। ১৫ বছর বিদেশ করে দেশে যাওয়ার পর বাবার কাছে ছেলেমেয়ের কত আবদার। আবদার আর পূরণ করতে পারলেন না হালিম। এর আগেই পরপারে চলে গেলেন তিনি। এ রকম পরিণতিতে পরিবার অসহায় অবস্থায় পড়েছে।

এদিকে হালিমের নিয়োগকর্তা থেকে বৈধ কাগজপত্র পাওয়ার জন্য হালিমের কোম্পানি লাংকা মোরনি এসডিএন বিএইচডির মালিক (বাংলাদেশি) দেলোয়ারের সঙ্গে +৬০১৪৬৬৬৬০৭০ ফোনে বারবার যোগাযোগ করেছে হাইকমিশন। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। নিয়ম অনুযায়ী কোম্পানি হালিমের লাশ দাফনে কাসকেট কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়ে থাকে।

কিন্তু তার কোম্পানি এখন পর্যন্ত কোনো লাশ দাফনের জন্য কাসকেট কোম্পানি নিযুক্ত করে হাইকমিশনে পত্র দেয়নি।

ফলে দ্রুত দাফন এবং ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির কাজ সম্পাদন করতে পারছে না হাইকমিশন।

এ বিষয়ে হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালয়েশিয়া সরকারের বিধি অনুযায়ী, যদি কোনো নিয়োগকর্তা কোম্পানি কর্মীর সমস্যায় এগিয়ে না আসে মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে হালিমের বেতন নিয়েও চলে প্রতারণা। হৃদয় নামে এক বাংলাদেশি প্রতারক হালিমের স্ত্রীকে ফোন করে জানিয়েছিল ১৮ জুলাই তার বেতনের টাকা পাঠিয়ে দেবে।

এরপর থেকে প্রতারক হৃদয়ের +৬০১১২৮৫৭৭৯১৯ ফোন বন্ধ রয়েছে। এরপর হালিমের পরিবার ক্ষতিপূরণ কবে পাবে সে বিষয়টিও নিশ্চিত নয়।