চলে গেলেন শফি বিক্রমপুরী

চলে গেলেন দেশের খ্যাতিমান পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশক এবং রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরী। গতকাল ভোর ৪টায় ব্যাংককের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এর আগে চলতি বছরের জুনে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শফি বিক্রমপুরী ১৯৪৩ সালের ৪ঠা জুলাই মুন্সীগঞ্জ জেলার (সাবেক বিক্রমপুর পরগণা) শ্রীনগর থানার মত্তগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে দক্ষিণাঞ্চলের লোকজ প্রেমকাহিনী অবলম্বনে নির্মিত ‘গুনাই বিবি’- সিনেমাটি যৌথ প্রযোজনার মাধ্যমে তিনি প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সে সময় হলিউডের বিখ্যাত ইংরেজি ছবি ‘অ্যাঞ্জেলিক’ এবং ‘ফান্টুমাস’ সিনেমা দু’টিও পরিবেশনা করেন তিনি। ১৯৭২ সালে খ্যাতিমান পরিচালক সুভাষ দত্ত পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা ‘অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’ এবং শহিদুল হক খান পরিচালিত ‘কলমি লতা’ সিনেমা দু’টি যৌথভাবে প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেন। ১৯৮৯ সালে ঢাকার মালিবাগে ‘পদ্মা’ এবং ‘সুরমা’ নামে দু’টি সিনেমা হল নির্মাণ করে প্রদর্শক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন শফি বিক্রমপুরী। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জের সিনেমা হল মালিক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য শফি বিক্রমপুরীর প্রযোজনায় নির্মিত ফোক ফ্যান্টাসি জাদুর সিনেমা ‘ডাকু মনসুর’, ‘বাহাদুর’ ও ‘রাজদুলারী’ পরপর দারুণ ব্যবসা সফল হয়েছিল। এরপর তিনি ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সবুজ সাথী’, ‘সকাল সন্ধ্যা’, ‘মাটির কোলে’, ‘শশীপুন্নু’, ‘শান্তি-অশান্তি’, ‘জজ সাহেব’, ‘দেনমোহর’ ও ‘অবুঝ মনের ভালোবাসা’সহ অনেক সিনেমা উপহার দেন। ঢাকার স্মৃতিকথা নিয়ে ‘ঢাকায় ৫০ বছর’ নামে একটি বই লিখেছেন তিনি। বইটি ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়। ১৯৭৯ 

সালে তিনি দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। সে বছরই বিএনপিতে যোগদান করেন। ১৯৮৪ সালে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হন। এ ছাড়া একজন সমাজসেবক হিসেবে তিনি বিক্রমপুরে প্রতিষ্ঠা করেছেন স্কুল ও মসজিদ। নেত্রকোনায় প্রতিষ্ঠা করেছেন মাদ্রাসা।