কে হবেন বাংলাদেশের ‘ফিলিপস’

বাংলাদেশ ১৭২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর প্রথম দিনে ৫ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। টেস্টের দ্বিতীয় দিন ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। লম্বা সময় ধরে উইকেট ছিল কভারে ঢাকা। যেখানে মিরপুর টেস্টের প্রথমদিনই ১৫ উইকেটের পতন। সেখানে উইকেটের কভার সরানোর পর আচরণ ভয়ঙ্কর হবে বলেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে দাঁড়িয়ে নিউজিল্যান্ড লিড নিয়েছে ৮ রানের। মিরপুরের স্পিন মরণ ফাঁদের তোয়াকা না করে লড়াই করেছেন গ্লেন পিলিপস। আউট হওয়ার আগে তিনি খেলেছেন ৭২ বলে ৮৭ রানের রানের ইনিংস। অথচ তিনি দলের বিপর্যয়ের দিনে মাত্র ৫ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন। তার এমন ব্যাটিং প্রথম ইনিংসে ১৮০ রানদ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৩৮ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বসে স্বাগতিকরা। ৩০ রানের লিড নিলেও প্রশ্ন হচ্ছে কতো রান হলে জয় পাবে বাংলাদেশ! দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাগতিক স্পিনার নাঈম হাসান বলেছেন ২শ’ হলেই জয় সম্ভব। কিন্তু প্রশ্ন এমন মায়াবী উইকেটে অসীম সাহস নিয়ে কে হবেন টাইগারদের ফিলিপস! ক্রিজে ১৬ রান করে অপরাজিত আছেন জাকির হাসান। শূন্য রানে উইকেটে আছেন দেশের অন্যতম সেরা টেস্ট ব্যাটার মুমিনুল হক। গতকাল তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১৫ মিনিট এগিয়ে, সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে। কিন্তু মাঠের কভার সরানো হয়নি বৃষ্টি থাকার কারণে। এরপর ১০টার দিকে বৃষ্টি থামলে শুরু হয় মাঠ পরিচর্যার কাজ। এরপর ১২টায় খেলা শুরু হলে মাঠে নামে নিউজিল্যান্ড। যেখানে এই টেস্ট দুইদিনেই শেষ হওয়ার শঙ্কা ছিল সেখানে বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিন খেলা মাঠে গড়ায়। ব্যাট করতে নেমে ফিলিপসের সঙ্গে কাইল জেমিসন, ড্যারিল মিচেল ও টিম সাউদির দৃঢ়তায় বাংলাদেশের করা ১৭২ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ১৮০ রানে অলআউট হয়েছে সফরকারী নিউজিল্যান্ড। কিছুটা কম হলেও উইকেটে স্পিনারদের সহায়তা ছিল। তাইজুল ও মিরাজরা যথারীতি টার্ন ও বাউন্স আদায় করে নিতে থাকেন। কিন্তু ফিলিপসকে দেখা যায় আক্রমনাত্মক ভূমিকাতে। আরেক পাশে মিচেল খেলতে থাকেন সতর্কতায়। তিনি হাত খুলে মারতে গিয়েই পড়েন বিপদে। নাঈমের বলে অনেকটা দৌড়ে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচ নেন মিরাজ। সফরকারীদের রান তখন ৭ উইকেটে ৯৭। ধারণা করা হচ্ছিল দ্রুতই হয়তো সব উইকেট তুলে নিয়ে লিড নিবে টাইগাররা। কিন্তু আশায় গুড়েবালি দেন ফিলিপস। নাঈমকে টানা দুই বলে ছক্কা-চার মেরে ফিফটি করেন তিনি ৩৮ বলে। ছাড় দেননি মিরাজ-তাইজুলদের বলেও। জুটি ভাঙার জন্য বোলিংয়ে আনা হয় মুমিনুল হককে। লাভ হয়নি তার উপর চড়াও হয়ে ছক্কা-চার মেরে বোলিং থেকে সরিয়ে দেন ফিলিপস। শেষ পর্যন্ত পেসার শরিফুলকে আক্রমণে আনতে বাধ্য হন অধিনায়ক শান্ত। কাজ হয় তাতেই। ওই ওভারের দ্বিতীয় বলেই ২০ রানে বিদায় নেন জেমিসন। জুটিতে ততক্ষণে উঠে গেছে ৫৫ রান। ফিলিপস এরপরও শট খেলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত শরিফুলের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে বিদায় নেন ফিলিপস। কিছু একটা নিয়ে বেশ অসন্তুষ্ট দেখা যায় তাকে। হয়তো কোনো সমস্যা ছিল সাইডস্ক্রিনে। পরের ওভারেই টিম সাউদিকে ফিরিয়ে ইনিংস শেষ করেন তাইজুল। তার শিকার ৩ উইকেট। অন্যদিকে মিরাজের সমান শিকার। দুটি উইকেট তুলে নিয়েছেন নাঈম হাসান। সিলেটে প্রথম টেস্ট জিতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ জিতলেই সিরিজ জয়ের ইতিহাস। কিন্তু প্রতিপক্ষকে অল্পতে আটকেও সুবিধা করতে পারছে না স্বগতিকরা। সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৮৬ রানের ইনিংস খেলা মাহমুদুল হাসান জয় আর রানে ফিরতে পারেননি। মিরপুরে দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি ব্যর্থ। ২ রানেই ফিরেছেন সাজঘরে।