তাহিরপুরে মাসিক সভা বয়কট করলেন চেয়ারম্যানরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা বর্জন করেছেন সাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তাদেরকে কোনো কিছু না জানিয়েই বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলের টাকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ও উপজেলা প্রকৌশলী ইচ্ছেমতো ব্যয় করায় তারা মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা বয়কট করেছেন। জানা যায়, বুধবার (৩১ জুলাই) ছিল তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের ৩য় মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা। সকাল ১১টার দিকে উন্নয়ন সমন্বয় সভা শুরু হয় উপজেলা পরিষদ পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে। সভা চলাকালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন সমন্বয় নিয়ে আলোচনা হলে উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলের টাকা বন্টন নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুলের সঙ্গে। সভায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মতবিরোধের সূত্র ধরে উপস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের ৫ জন চেয়ারম্যান সভা বয়কট করে চলে যান। পরে উপস্থিত আরো ২ জন ইউপি চেয়ারম্যান তাদের সমর্থন করে সভা বয়কট করেন। বিকেল ৩টার দিকে তাহিরপুরের গনম্যাধমকর্মীদের তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে বিষয়টি অবহিত করেন সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা। অভিযোগকালে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা জানান, বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলের ৮ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা সমহারে বন্টন না করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ৮২ জোড়া বেঞ্চ তৈরি করে নিজের ইচ্ছেমতো ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দিয়ে দেন। এমনকি বন্টনের দিনে তাদের মধ্যে কোনো একজন চেয়ারম্যানকেও বিষয়টি অবগত করা হয়নি। বাদাঘাট (উঃ) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় যে বিষয়গুলো নিয়ে সবার সম্মতিক্রমে সিদ্বান্ত গৃহীত হয়, তা কার্যকর না করে উপজেলা চেয়ারম্যান তার ইচ্ছেমতো সিদ্বান্ত নিয়ে কাজ করেন। যার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যানরা আজকের সমন্বয় সভা বয়কট করেছেন। উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, উপজেলা পরিষদে কি আছে না আছে তা তাদের জানতে দিতে নারাজ বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান। তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলের টাকা দিয়ে বিভিন্ন আসবাবপত্র দেয়া হয়, অথচ আমাকে জানানো হয় না। তাই আমরা এর প্রতিকার চেয়ে আজ উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা বয়কট করেছি। এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইদুল্লা মিয়া বলেন, বন্যার সময় তড়িঘড়ি করে ঠিকাদারের মাধ্যমে বেঞ্চগুলো তৈরি করে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্টন করা হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, গত মাসের সমন্বয় সভার সিদ্বান্ত অনুযায়ী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বেঞ্চ বানানো হয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় আমরা ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেঞ্চগুলো বন্টন করি। ইউপি চেয়ারম্যানদের আমরা কোনো কিছু জানাইনি এটা মিথ্যা। তাছাড়া সভা ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো কোনো ঘটনা আজ ঘটেনি। কেন তারা চলে গেলেন তা বোধগম্য হচ্ছে না। চলে যাওয়াটা তাদের নিজস্ব ব্যপার।