সুনামগঞ্জে এক হাত সড়কেই ভরসা ২০ হাজার মানুষের

নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের গুঁইড়া খাল সড়কটি পাখিমারা হাওরের ঢেউয়ের তা-বে বর্তমানে নিশ্চিহ্ন প্রায়। সড়কের দু’পাশ ভেঙ্গে মিশে গেছে হাওরের জলে। সড়কের একটি স্থানের মাটি পুরোটাই সরে গিয়ে এপার-ওপার খালে পরিণত হয়েছে। ভাঙ্গা অংশে বাঁশের সাঁকো দিয়ে সাময়িকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। দূর থেকে সড়কটি দেখলে মনে হয় জমির আইল। এক হাত পরিমাণ প্রস্থের অবশিষ্ট এই আইলটিই চলাচলের একমাত্র ভরসা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ২০ হাজার মানুষের। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটিতে মাটি ফেলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও হাটবাজারের সাথে ইউনিয়নবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার দাবি থাকলেও সে দাবিতে কর্ণপাত করেননি জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের কেউ। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিরাজ করছে অন্তহীন ক্ষোভ। জানা যায়, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পাগলা বীরগাঁও সড়কটি লাউয়া নদীর সেতু পর্যন্ত পাকা রাস্তা। এখান থেকে যানবাহনযোগে শহরে যাতায়াত করেন স্থানীয়রা। তবে লাউয়া নদীর সেতু থেকে গুঁইড়াখাল সেতু পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক কাঁচা অবস্থায় রয়েছে। বর্ষায় একটু পানি বাড়লেই তলিয়ে যায় সড়কের একাংশ। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পূর্বহাটি থেকে গুঁইড়াখাল পর্যন্ত। হাওরের দু’পাশের ঢেউয়ের তা-বে সড়কটি নিশ্চিহ্ন প্রায়। এলজিইডির অর্থায়নে গত বছর প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে গুঁইড়াখালের উপর দৃষ্টিনন্দন একটি সেতু নির্মাণ হলেও সড়ক না থাকায় সেতুটি প্রায় অব্যবহৃতই রয়ে গেছে। এই গুঁইড়াখাল সড়ক দিয়েই বীরগাঁও বাজার, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, বীরগাঁও ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়, বীরগাঁও ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ জেলা শহর ও বিভাগীয় শহরের যাতায়াত করে থাকেন স্থানীয় হাজারো মানুষ। কিন্তু সড়কটি বেহাল হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদেরকে। বীরগাঁও ইমদাদুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুবাস দাশ বলেন, ‘এক-দেড় হাত রাস্তা দিয়ে কোনোভাবে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করি। বৃষ্টি-বাদলের দিনে খুব সমস্যা হয় আমাদের। ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন শত শথ ছাত্রছাত্রী যাওয়া আসা করে সড়কটি দিয়ে।’ স্থানীয় ব্যবসায়ী মহিবুর রহমান মবু বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কারের দাবি করে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্ত কি এক অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। আগামী মৌসুমে এই সড়কে কাজ না হলে সড়কে একমুটো মাটিও থাকবে না। তখন স্থানীয়দের নৌকা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। অতিদ্রুত সড়কটি সংস্কার করতে হবে।’ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নূর কালাম বলেন, ‘আমরা সড়কটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দাবি জানিয়ে আসছি। গুঁইড়াখাল থেকে বীরগাঁও বাজার পর্যন্ত সড়কের পাকাকরণের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। আশা করছি গুঁইড়াখাল সড়কের কাজ আগামী অর্থবছরে শুরু হবে।’ এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নূর হোসেন বলেন, ‘লাউয়া নদী থেকে গুঁইড়াখাল পর্যন্ত সড়কে মাটি ফেলা ও পাকাকরণের জন্যে একটি প্রকল্প এলজিইডিতে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি প্রকল্পের অনুমোদন হয়ে আসবে।’