নারীদের নেতৃত্ব দানে বিকশিত হতে হবে: প্রধান বিচারপতি

নন্দিত ডেস্ক:প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, নারী পুরুষের সমতাভিত্তিক অধিকার নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসী আজ ঐক্যবদ্ধ। এ দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নারীদের এগিয়ে চলতে হবে এবং নেতৃত্ব দানে বিকশিত হতে হবে। সেজন্য সর্বস্তরে নিশ্চিত করতে হবে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বুধবার (৬ মার্চ) সুপ্রিমকোর্ট গার্ডেনে নারী আইনজীবীদের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি বলেন, নারীর অধিকার আদায় এবং সমমর্যাদার বিষয়টি আমাদের রাষ্ট্রীয় চিন্তা ও নীতিতেও প্রতিভাত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগের ফলে সকল ক্ষেত্রে নারীর প্রভূত উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন আদালতে নারী বিচারক ও আইনজীবীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। নারীরা ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজদেরকে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, নারীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বর্তমান জেন্ডার ইক্যুলিটি অ্যান্ড জেন্ডার জাস্টিসের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের রোল মডেল হতে পারে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নারী সংক্রান্ত ইস্যুতে অনেক সংবেদনশীল, যা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে প্রতিফলিত হয়েছে। পারিবারিক সহযোগিতা ও ইতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি বিচার বিভাগ ও আইন পেশায় নারীর বলিষ্ঠ পদচারণ বৃদ্ধি করতে পারে। কাজেই ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হলে নারীদের নবউদ্যোমে পেশাদারিত্ব অর্জনের মাধ্যমে নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, নারীদের এগিয়ে যাওয়ার গতি এখন ভারত থেকে আমাদের বেশি। এদেশের বিভিন্ন দলের নেতৃত্বে রয়েছেন নারী, মন্ত্রণালয়ে রয়েছে নারী। গত ১০ বছরে নারী জাগরণের গতি অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে, এটাই আমরা বিশ্বাস করি। সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, পুরুষ বিনা নারী কিন্তু অসম্পূর্ণ। এটা কিন্তু আমরা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করি। আমার মনে হয়, আপনারাও করেন।হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নাইমা হায়দার নারী দিবসের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, আমি নারী দিবস বলে আসলে কোনো কিছুতে বিশ্বাস করি না। কারণ ৮ মার্চ পেরিয়ে গেলেই নারী নিয়ে আমরা আর আলোচনা করি না। নারীর প্রতি সহিংসতা হয়, তা নিয়ে আলোচনা করি না। এ কারণে আমি সব সময় নারীর অধিকার নয়, মানবাধিকার নিয়ে কথা বলি। তবে আন্তজার্তিক নারী দিবস পালনের অবশ্যই একটি গুরুত্ব আছে। আমি বলব, প্রত্যেকটা দিনই হবে নারী ও নর দিবস। তিনি বলেন, আমাদের সহকর্মী পুরুষরা যদি আমাদের সহযোগিতা না করতো, তাহলে আমরা কেউই এ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারতাম না। আমি এ পর্যন্ত এসেছি, আমার বাবা, মা, ভাই, বোন ও বন্ধুদের সহযোগিতায়। এ কারণে বলব, সবাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পরে প্রধান বিচারপতি কেক কেটে নারী দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এ সময় সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিগণ, সিনিয়র আইনজীবী ও নারী আইনজীবী হোসনে আরা বাবলী, সানজিদা খানম, জান্নাতুল ফেরদৌসী রুপা, জেয়াসমিন সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।