কাতারে প্রধানমন্ত্রীর সফরে যা যা হলো

বাংলাদেশের সাড়ে চার লাখ শ্রমিকের কর্মস্থল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। সম্পতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে দুই দেশের মধ্যে সামরিক চুক্তি হয়েছে, যাতে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী কাতার সামরিক বাহিনীতে কাজ করার সুযোগ পাবে।গত ৪ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত কাতারের রাজধানী দোহায় সম্মেলনে যোগ দিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টসহ বাদশা শেখ তামিম ও রাজ পরিবার এবং সরকারি উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রীদের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রেক্ষাপটে বেশ কিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ থেকে সিফুডস আমদানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও একটি সামরিক চুক্তি সম্পন্ন হয়। 

সামরিক চুক্তির ফলে প্রাথমিকভাবে প্রায় ১২০০ বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী কাতার সামরিক বাহিনীতে কাজ করার সুযোগ পাবে। পর্যায়ক্রমে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে সামরিকসূত্র জানায়। যা বাংলাদেশের দক্ষ শ্রমিক রপ্তানির ক্ষেত্রে এক নতুন মাইল ফলক। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংজ্ঞের মহাসচিব ও বিশ্ব নেতাদের সাথে দ্বীপাক্ষিক আলোচনায় ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধসহ পৃথিবীকে মানবিক পৃথিবী গড়ে তোলার আহবান জানান । 

The Reise of Bengal Tiger শিরোনামে ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের বৈঠকে কাতার থেকে যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে তাদের সব ধরনের সহযেগীতার আশ্বাস দেন। এটি আয়োজন করেছিলো যৌথভাবে Bangladesh Investment Development Authority ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেন্জ কমিশন।

অন্যদিকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী যেসব দেশে প্রবাসীরা বসবাস করেন, তাদের ওই দেশের আইন মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানান। যদি আইন অমান্য করে কেউ প্রবাসে শাস্তি পায়, বাংলাদেশ সরকারের সেক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ার করে দেন। 

এ নাগরিক সংবর্ধনায় অনেক প্রবাসী, এমনকি দেশীয় গণমাধ্যমের স্থানীয় সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে না পারায় কিছুটা ক্ষোভ সৃষ্টি হয় কমিউনিটিতে। 

৭ মার্চ দোহা Waldorf Astoria হোটেলে জার্মান প্রবাসী সাংবাদিক লেখক খান লিটন পারিজাত প্রকাশনীর প্রকাশনায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের জার্মান অনুবাদ Poet Der Politik প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। 

খান লিটন ‘জার্মানিতে বঙ্গবন্ধু’ নামে আর একটি বই শিগগিরই প্রকাশ করবেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন; যা জার্মান, বাংলা ও ইংরেজি তিন ভাষায় প্রকাশিত হবে। 

খান লিটনের এই লেখাকে সাধুবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ও শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি উপস্থিত ছিলেন। 

কাতারের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী ও গালফ বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের সভাপতি ও সানসিটি গ্রুপের চেয়্যারম্যান সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশে প্রবাসীরা যাতে সহজে বিনিয়োগ করতে পারে তার জন্য সহযোগিতা কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ফলপ্রসূ সফরকে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেন কাতারে সদ্য নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, কাতারের বাদশা বা সরকারপ্রধান শেখ তামিম শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে সুন্দর ও সফল করতে সহযোগিতা করার জন্য রাষ্ট্রদূত প্রবাসী বাংলাদেশি কাতারের সর্বস্তরের কমিউনিটি ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। 

অন্যদিকে প্রবাসীদের বৈধ সহযোগিতার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূত ও তার সহকর্মীরা সব সময়ই প্রবাসীদের পাশে থাকবেন বলে জানান। 

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ইসলামিক মূল্যবোধ বজায় রেখেই বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তুলে ধরবেন কাতারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ মার্চ দোহা ত্যাগের প্রাক্কালে হোটেলের গেটে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রবাসীদের কথা