ছাতকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, আহত ৮০

ছাতকের দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের চেচান ও বাউর গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের ৮০ জন লোক আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ২৪ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের চেচান বাজার এলাকায় দু"গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, চেচান বাজারে বাউর গ্রামের শামসুদ্দিন মিয়ার ছেলে রাকিবুল হাসানের দোকানে বড়শির সুতা কিনতে যায় চেচান গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে তাওহীদ আহমেদ। এ সময় তাকে এলোমেলো ভাবে সুতা দিয়ে দেয় দোকানদার। এ নিয়ে তাওহীদ ও রাকিবুলের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হলে তাওহীদের মামা একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম তালুকদার দোকানে এসে রাকিবুলকে সুতা গুছিয়ে দেয়ার জন্য বলেন। এতে সে কর্ণপাত না করেই মোবাইল ফোনে গেইম খেলা নিয়ে ব্যস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আমিরুল ইসলাম। শুরু হয় তাদের মধ্যে হাতা-হাতি। 

ওই ঘটনার জের ধরে রাতে মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রথমে দু"পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে দু"গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত ২ ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৮০জন লোক আহত হয়। সংঘর্ষের সময় পুরো চেচান- বাউর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে সিলেট - সুনামগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। সড়কের দুইপাশে ছিলো আটকে পড়া যাত্রী ও মালবাহী হাজারো গাড়ির দীর্ঘ লাইন। সড়কে পড়েছিলো ইট-পাটকেলের স্তুপ। 

ছাতক থানাপুলিশ, জাউয়া বাজার ফাঁড়ির পুলিশ, হাইওয়ে থানাপুলিশসহ সুনামগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। সংঘর্ষ পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেছে।

কৈতক হাসপাতাল সুত্রে জানাগেছে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৮০ জন। গুরুতর আহত কিরণ মিয়া (৫০), ফয়ছল আহমদ(২৪),সফিকুল ইসলাম (৩৮),তাওহীদ (১৫),জাকির হোসেন (২২),তারেক আহমদ (১৮), শাওন মিয়া (২২), আব্দুল হাই (৫০), আশরাফ আহমদ (৩০), সাকিব আহমদ (১৭), সুহেল মিয়া (৩০), হোসাইন আহমদ (১৫), জুনেদ আহমদ (৩২),রাকিবুল(২২) সহ ২৪ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের কৈতক হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা প্রদান করা হয়। 

ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোহাম্মদ মাঈনুল জাকির জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সংঘর্ষের সময়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) রাজন বৈদ্য,সহকারী পুলিশ সুপার সুভাশিষ ধরসহ পুলিশের কর্মকর্তাবৃন্দ।