ছাতকে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :সুনামগঞ্জের ছাতকে আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (২৭ জুন) সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম মজুমদারের আদালতে এ মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী রেহেনা বেগম। এজাহারে এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের চাচাতো ভাই বিল্লাল আহমদকে আসামি করায় থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। একাধিকবার থানা পুলিশের কাছে ধরনা দিয়ে অবশেষে আদালতে এ মামলা দায়ের করেন রেহেনা বেগম। আদালত থানায় মামলাটি এফআইআরভুক্ত করার নির্দেশ দিয়ে ৫ দিনের মধ্যে হত্যা মামলা গ্রহণ না করায় ছাতক থানার ওসিকে ৪ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাতে ও বলা হয়েছে। উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের পুরান মৈশাপুর গ্রামের মৃত মাস্টার আব্দুস সাত্তারের পুত্র, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক, ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া শুক্রবার নিজ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন। শনিবার সকালে গ্রাম সংলগ্ন পাতলাচুড়া বিলের কচুরিপনায় পড়ে থাকা তার ব্যবহৃত জুতা ও লুঙ্গি এবং রোববার দুপুরে এ বিল থেকেই তাঁর ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফারুক মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার স্ত্রী রেহেনা বেগম বাদী হয়ে উত্তর খুরমা ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে থানা পুলিশ এ এজাহার গ্রহণ করেনি। মামলার বাদী নিহত ফারুক মিয়ার স্ত্রী রেহেনা বেগমের অভিযোগ, মামলার এজাহার থানার বড়কর্তার (অফিসার্স ইনচার্জ) পছন্দ হয়নি। যে কারণে ওসি মামলা নিতে অভিযোগের ভাষা পরিবর্তন ও ইউপি চেয়ারম্যানের নাম বাদ দিয়ে অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেন। মামলার বাদী এজাহার পরিবর্তন বা আসামির নাম বাদ না দেয়ার শর্তে অটল থাকায় গত ৫ দিনেও আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কোন মামলা হয়নি। এদিকে, ছাতক থানার এসআই অরূপ সাগর বাদী হয়ে একই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে থানায় মঙ্গলবার রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। নিহতের ভাই আকিক মিয়া জানান, ঘটনার পরদিন থেকেই থানায় এজাহার নিয়ে একাধিকবার যাওয়া হয়েছে। মামলার আসামিদের রক্ষা করতে থানার ওসি সে সময় থেকেই বিভিন্ন অজুহাত সৃষ্টি করে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার রাতে নিহতের পরিবারের অজান্তেই থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। এটি ওসির একটি সাজানো নাটক। ছাতক থানার ওসি আতিকুর রহমান জানান, ফারুক মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এসআই অরূপ সাগর বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী রেহেনা বেগম যে এজাহার থানায় দিয়েছিলেন তা পরিবর্তন করে দায়ের করার কথা বলা হলে তিনি এজাহার পরিবর্তন করে আর থানায় আসেননি। অপরদিকে খুনের ৬ দিন পেরিয়ে গেলেও ফারুক মিয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না পুলিশ। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশের ভূমিকা সাধারণ মানুষকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।